ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

যুগসন্ধিক্ষণের কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন কবি ও সাংবাদিক। ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ, দেশ ও সমাজভাবনা তাঁর রচনারীতির বিশেষত্ব। তাঁর হাত ধরেই বাংলা কবিতা মধ্যযুগের গণ্ডি পেরিয়ে আধুনিকতার রূপ পেয়েছে। বাংলা সাহিত্যে দুই যুগের মিলনকারী হিসেবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১২-১৮৫৯)

  • ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ৬ মার্চ, ১৮১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার শিয়ালডাঙ্গার কাঁচড়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
  • তাঁর ছদ্মনাম ‘ভ্রমণকারী বন্ধু'
  • তিনি যুগসন্ধিক্ষণের কবি, গুপ্ত কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত।
  • যুগসন্ধিক্ষণের সময়কাল ১৭৬০-১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ।
  • তিনি ২৩ জানুয়ারি, ১৮৫৯ সালে মারা যান ৷

তিনি কোন কোন পত্রিকা সম্পাদনা করেন ?

‘সংবাদ প্রভাকর' (২৮ জানুয়ারি, ১৮৩১ সালে যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুর ও প্রেমচান তর্কবাগিশের আনুকূল্যে তিনি পত্রিকাটি প্রকাশ করেন): এটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক। [এটি ১৮৩১ সালে সাপ্তাহিক এবং ১৪ জুন, ১৮৩৯ সালে দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে]
‘সংবাদ রত্নাবলী’ (১৮২৫), ‘পাষণ্ডপীড়ণ' (১৮৪৬), ‘সংবাদ সাধুরঞ্জন’ (১৮৪৭)।

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত বিখ্যাত কবিতাগুলো কী কী ?

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত বিখ্যাত কবিতাগুলো হচ্ছে স্বদেশ, তপসে মাছ, কে, বাঙালি মেয়ে, নীলকর, আনারস

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত সাহিত্যকর্মসমূহ কী কী ?

  • ‘প্রবোধ প্রভাকর’ (১৮৫৮): এটি কবিতার সংকলন ।
  • ‘হিত প্রভাকর’ (১৮৬১): এটি গদ্যে ও পদ্যে রচিত বিশেষ ধরনের গল্প।
  • ‘বোধেন্দু বিকাশ’ (১৮৬৩): এটি তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত নাটক ।

যুগসন্ধিক্ষণের কবি কে ? কেন বলা হয় ?

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তকে যুগসন্ধিক্ষণের কবি বলা হয়। ১৭৬০ সালে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের মৃত্যুর মাধ্যমে মধ্যযুগের সমাপ্তি ঘটে এবং ১৮০১ সাল থেকে বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ শুরু হলেও বাংলা কাব্যসাহিত্যে ১৮৬১ সালে ‘মেঘনাদবধ প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে আধুনিকতা শুরু হয়নি। এই একশ (১৭৬০-১৮৬০) বছর কাব্যে আধুনিকতায় পৌঁছার প্রচেষ্টা চলেছে মাত্র। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত মধ্যযুগের দেব-দেবীর কাহিনি বর্জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ছোট ছোট কবিতা লেখা শুরু করেন। তাঁর কবিতায় সমাজচেতনা থেকে শুরু করে দেশাত্মবোধ পর্যন্ত স্পষ্ট হয়ে উঠে। আবার তাঁর কবিতায় কবিয়াল ও শায়েরদের রচনার ঢং, পয়ার ও ত্রিপদীর ব্যবহারও লক্ষণীয়। তাঁর মধ্যে মধ্যযুগের কাব্য-বৈশিষ্ট্য ও আধুনিক যুগের সূচনা-বৈশিষ্ট্য সমানভাবে লক্ষ্য করা যায় বলে তাকে যুগসন্ধিক্ষণের কবি বলা হয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাকে ‘খাঁটি বাঙালি কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তাঁর বিখ্যাত পক্তি

  1. কতরূপ স্নেহ করি, দেশের কুকুর ধরি, বিদেশের ঠাকুর ফেলিয়া । (স্বদেশ)
  2. নগরের লোক সব এই কয়মাস। তোমার কৃপায় করে মহাসুখে বাস। (তপসে মাছ)

বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর

বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন

أحدث أقدم