বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কথাশিল্পী মাহমুদুল হক ১৬ নভেম্বর, ১৯৪১ সালে বারাসাত, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি 'অগ্রগামী' সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে 'বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' লাভ করেন। তিনি ২১ জুলাই, ২০০৮ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
মাহমুদুল হক রচিত উপন্যাসসমূহ কী কী?
- 'জীবন আমার বোন' (১৯৭২): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। উপন্যাসটিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঠিক আগের অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ২৭ মার্চের ঢাকা শহরের সমাজ ও রাজনীতির উত্তেজনা জায়গা করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় চরিত্র জাহেদুল কবির খোকার বয়ানের মাধ্যমে। খোকার তিনবোন রঞ্জু, মঞ্জু ও অঞ্জু। বাঞ্ছারামপুরে মামারবাড়ির পুকুরে ডুবে মৃত্যু ঘটে অঞ্জু ও মঞ্জুর। আত্মমগ্ন, বেখেয়ালি ও বোহেমিয়াম খোকাকে ভালোবাসায় আগলে রাখে ছোটবোন রঞ্জু। খোকা একমাত্র বোন রঞ্জুর জন্যই বেঁচে থাকতে চায়। নীলাভাবি চরিত্রটি খোকার কামের বস্তু ব্যতীত আর কোনোভাবেই উপন্যাসে প্রতিভাত হয়নি। ঔপন্যাসিকের মতে, 'নীলাভাবির শরীরই পৃথিবীতে খোকার কাছে সবচেয়ে লোভনীয় বস্তু।' খোকার প্রণয়প্রার্থী খালাত বোন বেলী, লুলু চৌধুরী, রাজীব, মুরাদ এ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র।
- 'অনুর পাঠশালা' (১৯৬৭): এটি সামাজিক বিভাজন কেন্দ্রীক উপন্যাস। চরিত্র: অনু ও সরদাসী।
- 'কালো বরফ' (১৯৭৭): এটি ছেচল্লিশের দাঙ্গা ও ১৯৪৭ সালের দেশভাগকে কেন্দ্র করে রচিত। উপন্যাসটিতে হিন্দু- মুসলমানের বিরোধ-দাঙ্গা, দ্বেষ-ক্ষোভ এবং মিলন-বিরহ পরিস্ফুটিত হয়েছে। চরিত্র: আব্দুল খালেক।
- 'খেলাঘর' (১৯৮৮): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। চরিত্র: রেহানা, মুকল ও ইয়াকুব। ২০০৬ সালে উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ন করা হয়।
- 'নিরাপদ তন্দ্রা' (১৯৬৮)
- 'অশরীরী' (১৯৭৯)
- 'চিক্কোর কাবুক' (শিশুতোষ উপন্যাস, ১৯৭৯)
- 'পাতালপুরী' (১৯৮১)
- 'মাটির জাহাজ' (১৯৭৭)
মাহমুদুল হক রচিত অন্যান্য সাহিত্যকর্ম কী কী?
- গল্পগ্রন্থ: 'প্রতিদিন একটি রুমাল' (১৯৯৪), 'মানুষ মানুষ খেলা' (২০০৯)।
- অনুবাদগ্রন্থ: 'শ্বাপদ' (১৯৭০), 'যুদ্ধ যখন শেষ হলো' (১৯৭২)।
- প্রবন্ধ: 'বিড়ালের মামী', 'ভয়াবহ কবরখানা', 'মোহিনী হীরকের কাহিনী', 'কি লিখবে'।