আন্তর্জাতিক পরিবেশগত ইস্যুগুলি এমন সমস্যা যা একাধিক দেশের সীমানা অতিক্রম করে এবং সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এই সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে: জলবায়ু পরিবর্তন , বায়ু দূষণ , জল দূষণ , বন উজাড় , জীববৈচিত্র্য হ্রাস ইত্যাদি । আন্তর্জাতিক পরিবেশগত কূটনীতি হল আন্তর্জাতিক পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের জন্য দেশগুলির মধ্যে আলোচনা এবং সমন্বয়ের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশগুলি পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের জন্য চুক্তি এবং সমাধান তৈরি করে।
পরিবেশ: 'পরিবেশ' বাংলা শব্দ, যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Environment. 'Environment শব্দটি ফরাসি 'Environner' থেকে উৎপত্তি। 'Environner' অর্থ বেষ্টনী করা বা ঘেরা। অর্থাৎ আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তাই নিয়েই গঠিত হয় পরিবেশ। পরিবেশকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: জড় পরিবেশ ও জীব পরিবেশ।
ইকোলজি: জীববিজ্ঞানের যে শাখায় কোনো অঞ্চলের জৈব এবং অজৈব পরিবেশের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক ও উক্ত সম্পর্কে বিষয়াদি আলোচনা করা হয় তাকে বাস্তুবিদ্যা বা ইকোলজি বলে।
বাস্তুসংস্থান : জীবের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে কোনো স্থানে বা এলাকায় জীব ও জড়ের মধ্যে যে নিবিড় আত্মসম্পর্ক গড়ে, তাকেই বলে বাস্তুসংস্থান বা ইকোসিস্টেম (Ecosystem).
গ্রিন হাউজ ইফেক্ট
☞ গ্রিন হাউজ (Green House) : গ্রিন হাউস হল কাঁচের তৈরি ঘর। ইহা সূর্যের আলো আসতে বাধা দেয় না কিন্তু বিকীর্ণ তাপ ফেরত যেতে বাধা দেয়। ফলে কাঁচের ঘরটি গরম থাকে। শীত প্রধান দেশে তীব্র ঠাণ্ডার হাত থেকে গাছপালাকে রক্ষর জন্য গ্রিন হাউস তৈরি করা হয়। গ্রিন হাউজ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন- সুইডিশ রসায়নবিদ সোভিনটে আরহেনিয়াস ।
☞ গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া (Green House Effect): পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবর্তনশীল আবহাওয়া প্রতিক্রিয়াকে গ্রিন হাউস ইফেক্ট বলে। গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলো পৃথিবীতে সূর্যের আলো আসতে বাধা দেয় না কিন্তু পৃথিবী থেকে বিকীর্ণ তাপ ফেরত যেতে বাধা দেয়। ফলে তাপ আটকে পড়ে পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৮৯৬ সালে সুইডিস রসায়নবিদ সোভনটে আর হেনিয়াস 'গ্রিন হাউস ইফেক্ট' কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন।
☞ গ্রিন হাউজ গ্যাস (Green House Gas): যে সকল গ্যাস গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী, তাদের গ্রিন হাউজ গ্যাস বলে। গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলো হলো-
- কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) ৪৯%
- মিথেন (CH4) ১৮%
- ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFC) ১৪%
- অন্যান্য (জলীয় বাষ্প) ১৩%
- নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) ০৬%
☞ গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার কারণ (Aetiology of Green House Effect):
- জীবাশ্ম জ্বালানী দহনের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- অবাধে বৃক্ষ উজাড় করার কারণে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন, এরোসল ইত্যাদিতে সিএফসি বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
☞ গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার পরিণতি (Result of Green House Effect):
পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে গেলে পাহাড়ের শীর্ষে এবং মেরু অঞ্চলে জমে থাকা বরফ গলে গিয়ে সমুদ্রতলের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে। ফলে, সমুদ্র উপকূলবর্তী নিম্নভূমি নিমজ্জিত হতে পারে। গ্রীন হাউজ এফেক্টের পরিণতিতে বাংলাদেশের নিম্নভূমি নিমজ্জিত হতে পারে। বিগত ১০০ বছরে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ০.৭ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘের আন্তরাষ্ট্রীয় জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেল (IPCC) তৃতীয় সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমুদ্র পৃষ্ঠে পানির উচ্চতা ৪৫ সেমি বাড়লে বাংলাদেশের ১১% ভূমি সমুদ্র গর্ভে নিমজ্জিত হবে। রিপোর্টে আরও বলা হয় ২১০০ সালের মধ্য সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১৮ সেমি হতে ৫৯ সেমি এ উন্নীত হবে।
☞ গ্রিন হাউজ এফেক্ট প্রতিরোধে করণীয় :
- জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার যথাসম্ভব সীমিত করা।
- বনাঞ্চল সংরক্ষণ ও নিয়মিত বনায়ন
- ক্লোরো ফ্লোরো কার্বনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং এর সস্তা বিকল্প ব্যবহার।
- উপকূলে বাঁধ দেওয়া।
☞ বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমিত উপস্থিতির গুরুত্ব :
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা ০.০৩%। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গের আলোক রশ্মিকে পৃথিবীতে প্রবেশ করতে সাহায্য করে পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রতিফলিত সূর্যের এ বিকিরিত আলোক রশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গ থেকে দীর্ঘ তরঙ্গে পরিণত হয়। কার্বন ডাইঅক্সাইড এ দীর্ঘ তরঙ্গ রশ্মিকে শুষে নিয়ে নিম্ন বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। এ গ্যাস যদি বায়ুমণ্ডল থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় তবে পৃথিবী রাতারাতি পরিণত হবে শীতল গ্রহে। তাই বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমিত উপস্থিতি জীবের স্বাভাবিক ও অনুকূল অস্তিত্বের জন্য আবশ্যক।
☞ কার্বন ও অন্যান্য গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের কারণ গুলো হলো :
- কয়লা তেল প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানির দহন
- অপরিকল্পিত নগরায়ন
- শিল্প কারখানা ট্যানারি প্রভৃতির বর্জ্য অব্যবস্থাপনা
- জনসংখ্যা বৃদ্ধি
- সার, কীটনাশকের অপরিমিত ব্যবহার
- মরুকরণ
- বনভূমির উজার নিধন
☞ বৈশ্বিক উষ্ণতা :
- গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাবে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধিকে বলা হয় - গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
- পৃথিবীর তাপমাত্রা গত ১০০ বছরে বেড়েছে প্রায় ০.৭৪°C।
- জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ: বৈশ্বিক উষ্ণতা।
- গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করে শীর্ষ দেশ গুলো হল:
- চীন (২৮%)
- আমেরিকা (১৫%)
- ভারত (৬%)
- রাশিয়া (৫%)
-জাপান (৪%)
- জার্মানি (২%)
- দক্ষিণ আফ্রিকা (১২তম)
- ব্রাজিল (১৩তম)
এই দেশগুলো ই-৮ এর অন্তর্ভুক্ত যারা ৭০% এর অধিক গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করে। - একুশ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ২.৫° থেকে ৫.৫° সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে একবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২০% অধিবাসীর সরাসরি ভাগ্য বিপর্যয় ঘটবে।
- জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, পরবর্তী ৫০ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩ ফুট বাড়লে সমুদ্র উপকূলবর্তী একটি অংশ প্লাবিত হবে এবং প্রায় ১৭% ভূমি পানির নিচে চলে যাবে।
- ADB এর সমীক্ষা থেকে জানা যায়, উষ্ণায়নের বর্তমান ধারা ২০৫০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ এশিয়ার শস্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে শতকের শেষ নাগাদ বিশ্বে চাষাবাদ ২০ - ৪০% পাবে।
ওজোনস্তর অবক্ষয়
ওজোন (Ozone) : ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপভেদ- এর সংকেত o3। ওজোনের রঙ গাঢ় নীল এবং গন্ধ মাছের আঁশটের মত।
বায়ুমণ্ডলে ওজোনস্তরের গুরুত্ব: বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোমণ্ডলে ওজোনের একটি স্তর অবস্থিত (ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৬৫ মাইল উপরে)। সূর্য রশ্মিতে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থাকে। অতিবেগুনি রশ্মি চর্ম ক্যান্সার, চোখে ছানিসহ নানাবিধ রোগ হতে পারে। ওজোন স্তর সূর্যের আলোর ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মির (Ultraviolet rays) বেশির ভাগই শুষে নেয়। ফলে মানুষসহ জীবজন্তু অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক দিক হতে রক্ষা পায়।
ফ্রেয়ন (Freons): ফ্রেয়নের রাসায়নিক নাম ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFC)। Prof. Thomas Midgley ১৯২০ সালে ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন আবিষ্কার করেন। রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন, এরোসোল, ইনহেলার প্রভৃতিতে ফ্রেয়ন ব্যবহৃত হয়। রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার, এয়ারকন্ডিশন প্রভৃতিতে শীতলীকারক হিসাবে ফ্রেওন ব্যবহৃত হয়। CFC সক্রিয় থাকে ৮০-১৭০ বছর।
ওজোনস্তরের অবক্ষয় (Ozone depletion):
বায়ুমণ্ডলে নির্গত ক্লোরোফ্লোরো কার্বন ওজোনস্তরে ফুটো সৃষ্টি করেছে। বৎসরের নির্দিষ্ট ঋতুতে এই গর্ত সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ মেরুতে এই গর্ত সৃষ্টি হয়।
CFC13 → CFCl2 + Cl;
Cl + O3 → ClO + O2
ClO + O3 → Cl + 202
• ওজোন স্তরে ফাটল আবিষ্কার করেন - বিজ্ঞানী শাকালেন।
• ওজোন স্তর ছিদ্রের কথা জানা যায় ১৯৮৩ সালে।
এসিড বৃষ্টি : শিল্পকারখানা হতে দূষিত গ্যাস বায়ুমগুলে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে এবং বাতাসে মিশে যাচ্ছে। এ দূষিত গ্যাসের CO2, SO2, NO2 প্রভৃতি বৃষ্টির পানির সাথে মিশে এসিডে পরিণত হয় এবং মাটিতে পড়ে। এসিডসম্পন্ন এ বৃষ্টিপাতকে বলে এসিড বৃষ্টি। এসিড বৃষ্টি হয়- সালফার ডাই-অক্সাইডের (SO₂,) আধিক্যে।
পরিবেশ দূষণ
রাসায়নিক, ভৌতিক ও জৈবিক কারণে পরিবেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের যে কোনো পরিবর্তনকেই বলে পরিবেশ দূষণ । পরিবেশ দূষণ প্রধানত চার প্রকার।
- বায়ুদূষণ
- পানিদূষণ
- মাটিদূষণ
- শব্দদূষণ
- প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান নিয়ামক : পানি, গাছপালা ইত্যাদি।
- 'ইকোলজি' শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন : জার্মান বিজ্ঞানী আর্নেস্ট হেকেল।
- পৃথিবীর প্রথম জাতীয় উদ্যান : ইয়োলো স্টোন ন্যাশনাল পার্ক।
- এশিয়ার সর্ববৃহৎ বস্তি অবস্থিত : ভারতের মুম্বাইয়ে
- বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির পদ্ধতিকে বলে : বায়ো একটিভা।
- ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ পরিচিত : প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে।
- বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণ নগরী :মেক্সিকো।
- ই-৮ হলো পরিবেশ দূষণকারী :৮টি দেশ।
- সর্ববৃহৎ সৌরশক্তি কেন্দ্র অবস্থিত : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
- ভ্যালি অব ডেথা বলা হয়; ব্রাজিলের কুবাতাও কে (ব্রাজিলের সবচেয়ে দূষিত শহর)।
- WRI এর পূর্ণরূপ: Wild Resource Institute (বনজ সম্পদ সম্পর্কিত ইনস্টিটিউট) ।
- যেখানে দুই বা ততোধিক উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্প্রদায় পরস্পর মিলিত হয়ে মিশে যায় তাকে বলে: ইকোটোন।
- সাগরের শেওলার সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে পৃথিবীর বাতাসে অক্সিজেন আসে - ৭০ ভাগ।
বায়ুদূষণকারী পদার্থসমূহ
- কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, সাসা, ধুলিকণা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মোটরগাড়ির ধোঁয়া, কলকারখানার বিষাক্ত বোয়া বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ।
- SMOG অর্থ দূষিত বাতাস (Smoke এবং Fog সমন্বয়ে SMOG শব্দটি সৃষ্টি হয়েছে।
- বাতাসে ভেসে বেড়ানো আর্সেনিক, সিসা, নিকেল প্রভৃতি ধাতু কণাকে বলে ভাসমান বজ্রকণা বা SPM
- গাড়ি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় যে বিষাক্ত গ্যাস থাকে তা হলো (CO) কার্বন মনোক্সাইড ।
- ডিজেল পোড়ালে উৎপন্ন হয় - সালফার ডাই-অক্সাইড।
- ওজোনের গড় ঘনত্ব প্রতি কেজি বাতাসে - ৬৩৫ মাইক্রোগ্রাম।
- পরিবেশের শব্দ দূষণের ফলে প্রধানত হতে পারে - উচ্চ রক্তচাপ।
- বায়ুদূষণের জন্য প্রধানত দায়ী - কার্বন -মনোক্সাইড।
- বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের স্বাভাবিক পরিমাণ- ০.০৩ শতাংশ।
- WHO এর মতে, বাতাসে SPM-এর স্বাভাবিক মাত্রা ২০০ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার।
পানি দূষণ
- পানিদূষণ বলতে বোঝায় পানির গুনাগুন এর যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ও ক্ষতিকর পরিবর্তন।
- পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৭৩ সাল থেকে নদীর পানি মনিটরিং এরে আসছে।
- ২৭টি নদীর পানি ৬৩টি স্থানে মনিটরিং করা হয়।
- যে নদীগুলোতে জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত কোন অক্সিজেন থাকে না - বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ নদী।
- দক্ষিণাঞ্চলে প্রবাহিত নদীর Turbidity বেশী দেখা যায়। কর্ণফুলী নদীতে সর্বোচ্চ COD - ৩৫ মিগ্রা/লি এর বেশি।
- যে দূষণ প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় - পানি দূষণ।
- সাগরের পানি তেল দ্বারা দূষিত হলে অক্সিজেন তৈরি কম হয়
- বুড়িগঙ্গার পানি দূষণের কারণ - শিল্প কারখানার বর্জ্য।
- বাংলাদেশের যে নদীর দূষণের মাত্রা সর্বাধিক : বুড়িগঙ্গা
- সাগরের ৮০% পানি দূষণের জন্য দায়ী - সাগর পাড়ের রাষ্ট্রগুলোর কর্মকান্ড।
- পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত সাগর মনে করা হয় - ভূমধ্যসাগরকে।
- পৃথিবীর সর্বাধিক মাত্রার দূষিত নদী - সিতারাম নদী, ইন্দোনেশিয়া।
- সাগরের কোন এলাকা সবচেয়ে বেশি দুষিত - তীরবর্তী এলাকা
- অম্ল বৃষ্টি সাধারণত যে এলাকায় বেশি হয় - শিল্পোন্নত দেশসমূহে।
- সর্বপ্রথম পানি দূষণ সমস্যাকে চিহ্নিত করেন - হিপোক্রেটিস।
- অধিকাংশ রোগ জীবাণুর উৎস - দূষিত পানি।
আর্সেনিক দূষণ
- বাংলাদেশে প্রথম আর্সেনিক শনাক্ত হয় : ১৯৯৩ সালে।
- বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে : ৬১টি জেলা আর্সেনিক দূষণের শিকার।
- বাংলাদেশের প্রাপ্ত আর্সেনিকের মাত্রা : ১.০১ মিলিগ্রাম/লিটার।
- আর্সেনিকের গ্রহণযোগ্য মাত্রা : বাংলাদেশ ০.০৫ মিলিগ্রাম/লিটার , WHO মতে ০.০১ মিগ্রা/লিটার।
- দেশের প্রথম আর্সেনিক ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট : গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায়।
- সর্বাধিক আর্সেনিক আক্রান্ত জেলা : চাঁদপুর
- দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র : কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি।
- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় : ১৯৫৯ সালে।
- আর্সেনিক পাওয়া যায়নি- পার্বত্য ৩ টি জেলায়, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলায়।
- আর্সেনিক দূরীকরণ সনো এবং আর্থ ফিল্টারের উদ্ভাবক প্রফেসর আবুল হুসমাম এবং অধ্যাপক দুলালী চৌধুরী।
- সায়দাবাদ পানি শোধন প্রকল্পে দৈনিক পানি উৎপাদন ক্ষমতা - ২২.৫ কোটি লিটার।
পলিথিন ব্যবহার ক্ষতিকর:
- ইথিলিনের একাধিক অণু রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে যে বড় অণু গঠন করে তাই পলিথিন। এটি একটি জটিল যৌগ। এ জটিল যৌগ পানি বা মাটির সাথে বিক্রিয়া করে না। ব্যবহারের পর পরিত্যক্ত পলিথিন মাটিতে বা পানিতে পচে না ফলে এটি দীর্ঘকাল অপরিবর্তিত থেকে মাটি, পানি তথা পরিবেশের ক্ষতি করে।
- ড. মোবারক হোসেন ২০১৮ সালে পাট থেকে সোনালী ব্যাগ নামে পচনশীল পলিথিন ব্যাগ আবিষ্কার করেন।
- পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার বড় কারণ : পরিবেশ দূষণ হ্রাস।
- ঢাকায় পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হয় : ১ জানুয়ারি ২০০২
- সারা বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হয় : ১ মার্চ ২০০২
তারিখ | দিবস |
---|---|
২ ফেব্রুয়ারি | বিশ্ব জলাভূমি দিবস |
২১ মার্চ | বিশ্ব বন দিবস |
২২ মার্চ | বিশ্ব পানি দিবস |
২৩ মার্চ | বিশ্ব আবহাওয়া দিবস |
মার্চের শেষ শনিবার | আর্থ আওয়ার (Earth Hour) |
এপ্রিলের যে কোনো বুধবার | আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস |
২২ এপ্রিল | বিশ্ব ধরিত্রী দিবস |
২২ মে | আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস |
৫ জুন | বিশ্ব পরিবেশ দিবস |
১৭ জুন | বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস |
২১ জুন | বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফিক দিবস |
২৯ জুলাই | বিশ্ব বাঘ দিবস |
১৬ সেপ্টেম্বর | আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস |
২২ সেপ্টেম্বর | বিশ্ব গাড়িমুক্ত দিবস |
২৭ সেপ্টেম্বর | বিশ্ব পর্যটন দিবস |
৪ অক্টোবর | বিশ্ব প্রাণী দিবস |
১৩ অক্টোবর | আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস |
১৯ নভেম্বর | বিশ্ব টয়েলেট দিবস |
৩ ডিসেম্বর | আন্তর্জাতিক কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ দিবস |
১১ ডিসেম্বর | বিশ্ব পর্বত দিবস |
সাল | বর্ষ |
---|---|
১৯৬৭ | আন্তর্জাতিক পর্যটন বর্ষ |
১৯৯৮ | আন্তর্জাতিক সমুদ্র বর্ষ |
২০০২ | আন্তর্জাতিক পর্বত বর্ষ/ আন্তর্জাতিক ইকো ট্যুরিজম বর্ষ |
২০০৩ | আন্তর্জাতিক জীবাণুমুক্ত পানি বর্ষ |
২০০৪ | আন্তর্জাতিক ধান বর্ষ |
২০০৬ | আন্তর্জাতিক খরা ও মরুকরণ বর্ষ |
২০০৮ | ইন্টারন্যাশনাল ইয়ারে অব প্লনেট আর্থ/ আন্তর্জাতিক আলু বর্ষ/ আন্তর্জাতিক স্যানিটেশন বর্ষ |
২০০৯ | আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক আঁশ বর্ষ |
২০১০ | আন্তর্জাতিক বাঘ বর্ষ/ আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য বর্ষ |
২০১১ | আন্তর্জাতিক বন বর্ষ/ বিশ্ব ভেটেরিনারি বর্ষ |
২০১২ | সকলের জন্য টেকসই জালানি বর্ষ |
২০১৩ | আন্তর্জাতিক পানি সহযোগিতা বর্ষ / আন্তর্জাতিক কিনুয়া (একধরনের শস্যদানা) বর্ষ |
২০১৪ | আন্তর্জাতিক পারিবারিক খামার বর্ষ |
২০১৫ | আন্তর্জাতিক আলু বর্ষ, আলোক ও আলোক নির্ভর প্রযুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক বর্ষ |
২০১৬ | আন্তর্জাতিক ক্যামেলিডস (Camelids)/ উট জাতীয় প্রাণী বর্ষ, আন্তর্জাতিক ডাল বর্ষ |
২০১৭ | টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক পর্যটন বর্ষ |
২০১৯ | আন্তর্জাতিক আদিবাসী ভাষা বর্ষ |
সাল | দশক |
---|---|
২০০৫-২০১৪ | দ্বিতীয় বিশ্ব আদিবাসী দশক/ টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা দশক/ জীবনের জন্য পানি দশক। |
২০০৬-২০১৬ | সমস্যাসংকুল অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন ও পুনর্গঠন দশক |
২০১০-২০২০ | খরা ও মরুকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন বর্ষ |
২০১১-২০২০ | নিরাপদ সড়ক দশক/ জীববৈচিত্র্য দশক/ তৃতীয় আন্তর্জাতিক ঔপনিবেশিক সুলভ আচরণ দূরীকরণ দশক |
২০১৪-২০২৪ | সকলের জন্য টেকসই শক্তি দশক |
২০১৮-২০২৮ | টেকসই উন্নয়নে পানি দশক |
পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা
☞ পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন
- ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (IUCN) : IUCN একটি বৈশ্বিক সংস্থা যা প্রকৃতির সংরক্ষণের জন্য কাজ করে। IUCN এর পূর্ণরুপ International Union for the Conservation of Nature । এটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের গ্ল্যান্ডে রয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বসতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ব্যাপারে কাজ করে। মূলত বেসরকারি সংগঠনের সদস্য হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং বেসরকারি সংরক্ষণ গুলো কাজ করে।
- জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP): UNEP হল জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা। UNEP এর পূর্ণরুপ United Nations Environment Programme. এটি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর কেনিয়ার নাইরোবিতে রয়েছে। এর ছয়টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। এটি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে জাতিসংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠন। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন কনভেনশনগুলো এ সংগঠনের মাধ্যমেই গৃহীত হয়। এর বার্ষিক বাজেট প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার।
- আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা / IMO : আইএমও হল জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা । IMO এর পূর্ণরুপ International Maritime Oganisation. আইএমও ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর লন্ডনে রয়েছে। এটির ১৭৫টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ৩টি সহযোগী সদস্য রয়েছে। নৌ চলাচল সংক্রান্ত বিষয়ের উপর দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রথম সংগঠন হলো IMO. এর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র পথে জাহাজ চলাচলের সুযোগ বৃদ্ধি ও সুনিশ্চিতকরণণর মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কনভেনশন ও প্রটোকল গৃহীত হয়েছে ৩০টিরও অধিক।
- Green peace : গ্রিনপিস একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী অলাভজনক সংগঠন যা বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের জন্য প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কাজ করে। এটি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে রয়েছে। গ্রিনপিসের বিশ্বজুড়ে ৪১টি দেশে অফিস রয়েছে । ১৯৭০ সালের যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিবাদে Don't make a wave committee গঠিত হয় যা পরবর্তীতে গ্রিনপিস হিসেবে যাত্রা করে। গ্রিনপিসের যাত্রা শুরু হয় পুরাতন মাছ ধরা নৌকা দিয়ে। গ্রিনপিস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৬ সালে (সদর দপ্তর কাইলুয়া, যুক্তরাষ্ট্র)।
- বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) : বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) হল জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা । WMO এর পূর্ণরুপ World Meteorological Oganisation. WMO ১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ড , জেনেভায় অবস্থিত। এটির ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ৬টি সহযোগী সদস্য রয়েছে। ১৮৭৩ সাল থেকে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা গুলোর দায়িত্ব নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন গ্রীন হাউজ গ্যাস এবং বায়ুমন্ডলের গঠন অনুধাবনের বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রতিষ্ঠাকালীন এর নাম ছিল IMO। ২৩ মার্চ ১৯৫০ সালে নামকরণ হয় WMO। জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থার মর্যাদা লাভ করে ২০ ডিসেম্বর ১৯৫১ সালে।
- আইপিসিসি ( IPCC ) : আইপিসিসি হল জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা । বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) যৌথভাবে ১৯৮৮ সালে আইপিসিসি প্রতিষ্ঠা করে। অর্থাৎ WMO + UNEP = IPCC. IPCC এর পূর্ণরুপ Intergovernmental Mental Panel on Climate Change. এটি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে UNCCC কে কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে IPCC. প্রকৃতপক্ষে এই প্যানেল হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ২৫০০ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের একটি নেটওয়ার্ক। IPCC-র প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৮ সালে। পরিবেশ সংক্রান্ত অবদানের জন্য IPCC ২০০৭ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়।
- বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিল (WWF) : এটি প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক সংস্থা। এটি একটি বৈশ্বিক সংস্থা যা প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য কাজ করে। এটি ১৯৬১ সালের ২৮ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের গ্ল্যান্ডে রয়েছে।
পরিবেশ বিষয়ক বাংলাদেশী সংস্থা ও সংগঠন
- বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (BAPA) :
• গঠন: ২০০০ সালে
• সদর দপ্তর: লালমাটিয়া, ঢাকা - বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ফোর্স (BEMF) : • সদর দপ্তর: নয়া পল্টন, ঢাকা
- বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট ল'ইয়ার্স এসোসিয়েশন (BELA) :
• গঠন: ১৯৯২
• সদর দপ্তর: ধানমন্ডি, ঢাকা
• নির্বাহী প্রধান: সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান - পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) : • সদর দপ্তর: ধানমন্ডি, ঢাকা
- পরশ : • পরিবেশ রক্ষার শপথ
- BEN : Bangladesh Environment Nature
☞ ই-৮ : পরিবেশ দূষণকারী শীর্ষ ৮টি দেশকে বোঝাতে ই-৮- প্রপঞ্চটি ব্যবহৃত হয়। ই-৮ ভুক্ত দেশগুলো পৃথিবীতে উৎপন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের ৭০ শতাংশই তারা উৎপাদন করে থাকে। দেশগুলো হলো-
- চীন
- যুক্তরাষ্ট্র
- ইইউ
- রাশিয়া
- জাপান
- ভারত
- দক্ষিণ আফ্রিকা
- ব্রাজিল
পরিবেশ বিষয়ক চুক্তি ও সনদ
ভিয়েনা কনভেনশন
- সম্পূর্ন রূপ : Vienna Convention for the Protection of the ozone layer.
- গৃহীত হয় : ১৯৮৫ সালের ২২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার ভিয়েনায়।
- কার্যকর হয় : ১৯৮৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর
- অন্যান্য তথ্যাবলী :
ওজোন স্তরের ফাটলের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি।
বাংলাদেশ ভিয়েনা কনভেনশন অনুমোদন করে ২ আগস্ট ১৯৯০।
ভিয়েনা কনভেনশন হলো জাতিসংঘের পরিবেশ প্রোগ্রাম দ্বারা অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় কূটনৈতিক কনফারেন্সে গৃহীত ওজোন স্তর সুরক্ষা বিষয়ক কিছু নীতিমালা। এই কনভেনশনের চুক্তি অনুযায়ী কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এগুলো হলোঃ ওজোন স্তর রক্ষা করার জন্য যথাযথ পদক্ষে গ্রহণ করা, ওজোন স্তর পরিস্থিতি এবং সিএফসি নির্গমন ও ঘনত্বের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি।
মন্ট্রিল প্রটোকল
- (বায়ুমন্ডলে স্ট্যাটোস্ফিয়ারিক স্তরে অবস্থিত ওজেনিন্তরকে রক্ষা বিষয়ক প্রটোকল)
- সম্পূর্ন রূপ: Montreal Protocol on substances that deplete the ozone layer.
- গৃহীত হয়: ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে গৃহীত হয়।
- কার্যকর হয়: ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি
- স্বাক্ষরকারী দেশ: ৪৬
- অন্যান্য তথ্যাবলী: ১৬ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন ODS এর পর্যায় ক্রমিক রাশির জন্য আর্টিকেল-২ চুক্তি করা হয়। বাংলাদেশ অনুমোদন করে ২ আগস্ট ১৯৯০। এ পর্যন্ত ৫ বার সংশোধিত হয়েছে।
বাসেল কনভেনশন
- সম্পূর্ন রূপ : Basel convention on the Control of Transboundary movement of Hazardous wastage and their Disposal.
- গৃহীত হয় : ১৯৮৯ সালের ২২ মার্চ সুইজারল্যান্ড এর বাসেলে
- কার্যকর হয় : ১৯৯২ সালের ৫ ই মে
- অন্যান্য তথ্যাবলী : বিপজ্জনক বর্জ্য দেশের সীমানার বাইরে চলাচল এবং এদের নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন। বাংলাদেশ অনুমোদন করে ১ এপ্রিল ১৯৯৩।
জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন
- সম্পূর্ণ রূপ : Convention on Biological Diversity
- গৃহীত হয় : ১৯৯৩ সালের ৫ জুন ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো
- কার্যকর হয় : ১৯৯৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর
- অন্যান্য তথ্যাবলী : জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এর উপাদানগুলোর ব্যবহার বৃদ্ধি সংক্রান্ত কনভেনশন।
কার্টাগেনা প্রটোকল
- সম্পূর্ণ রূপ : Cartagena Protocol in Biosafety to the convention on Biological Diversity.
- গৃহীত হয় : ১৯৯৯ সালে কলম্বিয়ার কার্টাগেনা শহরে জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক এই চুক্তিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
- স্বাক্ষরিত হয়: ২৯ জানুয়ারি ২০০০। মন্ট্রিল (কানাডা)
- কার্যকর হয় : কার্যকর হয়: ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৩
- অন্যান্য তথ্যাবলী : জীব প্রযুক্তির ব্যবহার দ্বারা পরিমার্জিত প্রাণের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ সংক্রন্ত প্রটোকল অর্থাৎ জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক প্রটোকল বাংলাদেশ ২০০০ সালের ২৪ মে এটি স্বাক্ষর করে এবং অনুমোদন করে ২০০৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি।
কিয়োটো প্রটোকল
- সম্পূর্ন রূপ: Kyoto Protocol to the United Nations Framework convention on climate change
- লক্ষ্য : কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানো (এ চুক্তি অনুযায়ী উন্নত দেশসমূহ ২০১২ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ ৫.২% হ্রাস করা)
- স্বাক্ষরকাল: ১৯৯৭ সালের ১১ ডিসেম্বর জাপানের কিয়োটোতে গৃহীত হয় ।
- কার্যকর হয়: ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি
- অন্যান্য তথ্যাবলী:
স্বাক্ষরকারী দেশ ১২৭
কার্বন সনদ নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ ২২ অক্টোবর ২০০১ এ প্রটোকল অধিগত বা সমর্থন করে।
প্রথম মেয়াদ ২০১২ পর্যন্ত।
দ্বিতীয় মেয়াদ ২০২০ পর্যন্ত।
নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে যে দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, কিয়োটো প্রোটোকল একটি বহুরাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি যা এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলিকে গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসের জন্য দায়বদ্ধ করে। বর্তমানে এই চক্তি দ্বারা ১৯২টি দেশ দায়বদ্ধ রয়েছে।
এজেন্ডা ২১ ও গ্লোবাল ফোরাম
এজেন্ডা ২১ হলো- ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত পরিবেশ ও উন্নয়ন জাতিসংঘ সম্মেলনে গৃহীত একটি দলিল । গ্লোবাল ফোরাম হলো- ১৯৯২ সালে ধরিত্রী সম্মেলনের সমান্তরালভাবে রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত এনজিওদের সঙ্গে।
গ্রীন ডিল
'Green Deal' একটি জলবায়ু সংক্রান্ত চুক্তি। চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ফ্রান্সে ২০১৯ সালে ইউরোপীয় সবুজ ডীল হচ্ছে ইউরোপীয় কমিশন কর্তৃক গঠিত। ২০৫০ সালে জলবায়ু নিরপেক্ষ ইউরোপ তৈরী। একটি মূল্যায়ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হতে যাচ্ছে যেখানে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য লক্ষ্য ১৯৯০ এর তুলনায় ২০৩০ এ কমপক্ষে ৫০-৫৫%
নাম | স্বাক্ষর | কার্যকর |
---|---|---|
কিয়োটো প্রটোকল | ১১ ডিসেম্বর ১৯৯৭ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ |
জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত রূপরেখা কনভেনশন | ৯ মে ১৯৯২ | ২১ মার্চ ১৯৯৪ |
জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন | ৫ জুন ১৯৯২ | ২৯ ডিসেম্বর ১৯৯৩ |
মন্ট্রিল প্রটোকল | ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ | ১ জানুয়ারি ১৯৮৯ |
বায়ুদূষণ কনভেনশন | ১৩ নভেম্বর ১৯৭৯ | ১৬ মার্চ ১৯৮৩ |