বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র কৃত্রিম উপগ্রহ হল বঙ্গবন্ধু-১। এটি ২০১৮ সালের ১১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মাধ্যমে ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের তালিকায় যোগদান করে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
১১ মে ২০১৮ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয় বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১'। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বিশ্ব স্যাটেলাইট ক্লাবে গৌরবময় অভিষেক হয় বাংলাদেশের। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন (SAFE) চ্যাম্পিয়নশিপ সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম মহাকাশ যোগাযোগ উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১'-এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। বাণিজ্যিক সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২ অক্টোবর ২০১৯।
⮚ স্যাটেলাইটের পরামর্শক 'থাইকম': 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১'-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পরামর্শক নিযুক্ত হয়েছে থাইল্যান্ডের স্যাটেলাইট কোম্পানি 'থাইকম' ।
- বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
- বাংলাদেশে প্রথম স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ শুরু হয় : ২০০৭ সালে
- মহাকাশে স্যাটেলাইট সংখ্যা ৫৭ টির দেশের : দুই হাজারের উপর স্যাটেলাইট বিদ্যমান।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মিত হয় : ফ্রান্সের কান টুলুজ ফ্যাসিলিটিতে।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ওজন : ৩.৭ টন ।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে লেখা আছে : জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ট্রান্সপন্ডার : ৪০টি। দেশে ব্যবহারের জন্য ২০টি। ভাড়া দেওয়া হবে ২০টি।
- জাতিসংঘের মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা : ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার্সের (ইউএনওওএসএ)।
- ট্রান্সপন্ডারের ব্যান্ড : ৪০টি। কেইড ব্যান্ড (২৬টি) ও সি ব্যান্ড (১৪টি)
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন : ২ টি। গাজীপুরের জয়দেবপুরে ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ।
- প্রতিবছরই স্যাটেলাইটের সংখ্যা বাড়ছে : ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে
- স্যাটেলাইটের ধরণ : আবহাওয়া স্যাটেলাইট, পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট, ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট, যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট ইত্যাদি ।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ধরণ : যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট বা জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট ।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করে : ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিস্তৃত : ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত।
- বাংলাদেশ ছাড়াও সার্কভুক্তসব দেশ : ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তানের কিছু অংশ এই স্যাটেলাইটের আওতায় আসবে। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।
- বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত কক্ষপথ (অরবিটাল) : ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।
- কক্ষপথসহ স্যাটেলাইটের স্থায়িত্ব : ১৫ বছর পর্যন্ত।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ : এর স্থায়িত্ব প্রায় ১৮ বছর।
- কক্ষপথ বা অরবিটাল স্লট কেনা হয়েছে : রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে।
- কক্ষপথটি যে সালে কিনা হয় : ২০১৩ সালে।
- স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয় : নতুন একটি ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিট (শনিবার ১২ মে, ২০১৮)।
- ফ্যালকন-৯ রকেট যাদের : মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের।
- বিশ্বে স্যাটেলাইটে যুগে বাংলাদেশ : ৫৭ তম ।
- স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে : মহাকাশঅনুসন্ধান ও মহাকাশযান নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স।
- স্যাটেলাইট তৈরির এই পুরো কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে তত্ত্বাবধানকারী : বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযাগোযাগে নিয়ন্ত্রণ কমিশন)।
- স্যাটেলাইট পরিচালনা, ব্যবহার ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পাদন করবে : বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড।
- বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ স্থান-যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের অরল্যান্ডারে কেনেডি স্পেস সেন্টারের কেপ কেনালে থেকে।
দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটে বাংলাদেশ
- ২৩ মার্চ ২০১৭ দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও ভারত।
- 'অরবিট ফ্রিকোয়েন্সি কো-অর্ডিনেশন অব সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট প্রোপোজিড অ্যাট ফোর্টি এইট ডিগ্রি ইস্ট' শীর্ষক এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভারতের উদ্যোগে তৈরি এ স্যাটেলাইটটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয় বাংলাদেশ।
- কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করছে ভারত সরকার।
- দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটের ১২টি ট্রান্সপিন্ডারের মধ্যে একটি বিনামূল্যে বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারবে। পাকিস্তান ছাড়া এ অঞ্চলের সব দেশই এতে যোগ দিচ্ছে।
- বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট 'বঙ্গবন্ধু-১'-এর জন্য দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট সাংঘর্ষিক হবে না। কারণ, দুটি স্যাটেলাইট একে অন্যের কাছ থেকে ৭০° দূরবর্তী দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।