বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী হলো বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী ও দেশের সর্বোচ্চ সামরিক শক্তি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেওয়া এই বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী – এই তিন শাখার সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক / প্রধান মহামান্য রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, জাতির বিভিন্ন দুর্যোগেও ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে সাহায্য করে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও তাদের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২১ নভেম্বর । তাছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার জন্য রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ , র্যাব ও কিছু স্পেশাল বাহিনী । সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি ) ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হলো বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেওয়া এই বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল ভার বহন করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পূর্বনাম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট । ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা মেজর গণি । মেজর গণিকে টাইগার উপাধি দেওয়া হয়েছিল ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে বীরত্বের জন্য । বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শ্লোগান - ‘সমরে আমরা শান্তিতে আমরা সর্বত্র আমরা দেশের তরে’। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তিনটি প্রধান অংশে বিভক্ত:
- পদাতিক: সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অংশ, যারা স্থলভাগে যুদ্ধ পরিচালনা করে।
- বাহিনী: কামান, ট্যাঙ্ক, রকেট ইত্যাদির মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করে।
- বিশেষ বাহিনী: কাউন্টার-ইনসারজেন্সি, অ্যান্টি-টেরোরিজম, ও স্পেশাল অপারেশনস পরিচালনা করে।
⮚ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কণিকা :
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতীক : ক্রস চিহ্নিত দুইটি তরবারী ও উপরে কৌণিক অবস্থায় জাতীয় ফুল শাপলা ।
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ :
৩ জন। যথা-
ক) সিপাহী মোস্তফা কামাল
খ) সিপাহী হামিদুর রহমান
গ) ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর - বাংলাদেশে সেনানিবাস আছে : ঢাকা, সাভার (ঢাকা), মিরপুর (ঢাকা), রাজেন্দ্রপুর (গাজীপুর), মাঝিড়া (বগুড়া), কাদিরাবাদ (নাটোর), রাজশাহী, শহীদ সালাউদ্দিন (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল), জালালাবাদ (সিলেট), জাহানারাবাদ (খুলনা), ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর, সৈয়দপুর (নীলফামারী), খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি। পোস্তগোলা সেনানিবাস (ঢাকা) খোলাহাটি সেনানিবাস (দিনাজপুর) , বান্দরবান সেনানিবাস , আলীকদম সেনানিবাস (কক্সবাজার) , শেখ হাসিনা সেনানিবাস লেবুখালী পটুয়াখালী (৩১ তম সেনানিবাস)
- বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় : বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেসনালস মিরপুর, ঢাকা।
- বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীতে ডিগ্রী প্রদান করা হয় : আর্মি স্টাফ কলেজ হতে
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পদাতিক ডিভিশন : ১০টি। (১০ম সপ্তম পদাতিক ডিভিশন, অবস্থিত- লেবুখালি, পটুয়াখালী)
- 'সোর্ড অব অনার' প্রদান করা হয় : সেনাবাহিনীর চৌকষ ক্যাডেটদের
- বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত জেনারেল পদবী লাভ করেছেন :
৬ জন।
১. এম.এ.জি ওসমানী (প্রথম)
২. মঈন ইউ আহমদ
৩. আবদুল মুবিন চৌধুরী
৪. ইকবাল করিম ভূঁইয়া
৫. আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক
৬. আজিজ আহমেদ - সশস্ত্র বাহিনীর স্টাফ কলেজ অবস্থিত : মিরপুর সেনানিবাস, ঢাকা
- বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি অবস্থিত : ভাটিয়ারি, চট্টগ্রাম
- রাইফেলস ট্রেনিং একাডেমি 'বায়তুল ইজ্জত' অবস্থিত : সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
- ISSB হল- : সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ ও বাছাই বোর্ড
- ISSB এর পূর্ণরূপ : Inter Service Selection Board
- সামরিক শাসন জারি হলে : জনগণের সার্বভৌমত্ব উহ্য থাকে
- বাংলাদেশে প্রথম সামরিক শাসন জারি করা হয় : ১৯৭৫ সালে
- বাংলাদেশে প্রথম সামরিক শাসন জারি করেন : খোন্দকার মোশতাক আহমেদ
- বাংলাদেশে সর্বশেষ সামরিক শাসন জারি করা হয় : ১৯৮২ সালে
- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন : কে. এম, শফিউল্লাহ
⮚ প্রথম নারী মেজর জেনারেল : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম নারী মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন ডা. সুসানে গীতি এমবিবিএস, এমসিপিএস, এফসিপিএস, এমএমএড। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তাকে মেজর জেনারেল পদবির র্যাংক, ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়। মেজর জেনারেল সুসানে গীতি ১৯৮৫ সালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে হেমাটোলজিতে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন । বর্তমানে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী হলো বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আকাশপথের রক্ষাকারী শাখা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেওয়া এই বাহিনী দেশের আকাশসীমান্ত রক্ষা ও আকাশে আধিপত্য বিস্তারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত:
- যোদ্ধা বিমান: যুদ্ধে শত্রু বিমান মোকাবেলা ও আক্রমণের জন্য।
- পরিবহন বিমান: সেনা ও সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য।
- হেলিকপ্টার: উদ্ধার, ত্রাণ, ও যোগাযোগের জন্য।
⮚ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কণিকা :
- বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর শ্লোগান : বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত
- বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রতীক : উড়ন্ত ঈগল ও এর উপরে শাপলা
- বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ : ১ জন। ফ্লাইট লে, মতিউর রহমান
- বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমি অবস্থিত : যশোর
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী হলো বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নৌপথের রক্ষাকারী শাখা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেওয়া এই বাহিনী দেশের সমুদ্রসীমান্ত রক্ষা ও সমুদ্রে আধিপত্য বিস্তারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত:
- যুদ্ধজাহাজ: শত্রু জাহাজ মোকাবেলা ও আক্রমণের জন্য।
- পরিবহন জাহাজ: সেনা ও সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য।
- সহায়ক জাহাজ: উদ্ধার, ত্রাণ, ও টহলদারির জন্য।
⮚ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কণিকা :
- বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শ্লোগান : শান্তিতে সংগ্রামে সমুদ্রে দুর্জয়
- বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতীক : কাছিবেষ্টিত নোঙ্গর ও এর উপর শাপলা
- বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ : ১ জন। মোহাম্মদ রুহুল আমিন
- বাংলাদেশের প্রথম রণতরী : বি. এন.এস.পদ্মা
- বাংলাদেশের বৃহত্তম রণতরী : বি. এন. এস বঙ্গবন্ধু
- বাংলাদেশের প্রথম নৌবহরে নাম : বঙ্গবন্ধু
- বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্য জাহাজ :বাংলার দূত
- বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি অবস্থিত : জলদিয়া, চট্টগ্রাম
- বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি অবস্থিত : পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
- টাস্কফোর্স : সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সম্মিলিত দল
⮚ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হলো সাবমেরিন: ২০১২ সালে চীনের কাছ থেকে ২টি মিং-ক্লাস সাবমেরিন ক্রয় করার জন্য চুক্তি করা হয়। এই চুক্তি অনুসারে ২০১৯ সালে বিএনএস জয়যাত্রা এবং বিএনএস নবযাত্রা নামে দুটি সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়। এর ঘাঁটি কক্সবাজারে অবস্থিত। ফোর্সেস গোল ২০৩০ অনুসারে আরো ৪টি অ্যাটাকিং ক্লাস সাবমেরিন ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছে।
⮚ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হলো দুটি নতুন যুদ্ধজাহাজ: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ চীনে নবনির্মিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ 'সংগ্রাম' ও 'প্রত্যাশা' চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায়। চীনে তৈরি জাহাজ দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার এবং প্রন্থ ১১ মিটার। জাহাজ দুটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পদবী
সেনাবাহিনী | বিমানবাহিনী | নৌবাহিনী |
---|---|---|
ফিল্ড মার্শাল | মার্শাল অব দি এয়ার ফোর্স | এডমিরাল অব দি ফ্লিট |
জেনারেল | এয়ার চিফ মার্শাল | এডমিরাল |
লেফটেন্যান্ট জেনারেল | এয়ার মার্শাল | ভাইস এডমিরাল |
মেজর জেনারেল | এয়ার ভাইস মার্শাল | রিয়াল এডমিরাল |
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল | এয়ার কমোডর | কমোডর |
কর্নেল | গ্রুপ ক্যাপ্টেন | ক্যাপ্টেন |
লেফটেন্যান্ট কর্নেল | উইং কমান্ডার | কমান্ডার |
মেজর | স্কোয়াড্রন লিডার | লেফটেন্যান্ট কমাণ্ডার |
ক্যাপ্টেন | ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট | লেফটেন্যান্ট |
লেফটেন্যান্ট | ফ্লাইং অফিসার | সাব ল্যাফটেন্যান্ট |
সেকেন্ড ল্যাফটেন্যান্ট | পাইলট অফিসার | মিডশিপম্যান |
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক ইরান-ইরাক যুদ্ধে নিরপেক্ষ সামরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপ (UNIMOG) হিসেবে মোতায়েনের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে, বাংলাদেশ ৪০ টিরও বেশি দেশে ৬৩ টি মিশনে ১,৮৮,৫৫৮ জন শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছে। বর্তমানে ১৩ টি দেশে ৭,৪৩৬ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছে।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। তাদের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা এবং মানবিকতার জন্য তারা খ্যাতি অর্জন করেছে। দায়িত্ব পালনকালে ১৬৭ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী জীবন দিয়েছেন এবং ২৫৯ জন আহত হয়েছেন।
⮚ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশ : প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা মিশনের ফোর্স জেনারেশন প্রধানের পদ লাভ করে বাংলাদেশ; যাতে সেনাবাহিনীর কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। ৯ জুলাই ২০১৯ নিউইয়র্কে মিশনের সামরিক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কার্লোস হামবার্তো লয়তে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের হাতে এর নিয়োগপত্র তুলে দেন।
⮚ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় : বর্তমানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় আর শীর্ষে আছে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া। প্রতি বছর ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপিত হয়।
সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। সামরিক শক্তির ক্ষেত্রেও তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সামরিক শক্তিতে Global Firepower (CFP) নামের একটি ওয়েভসাইট মার্কিন গোয়েন্দা দফতর CIA 'র প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশ্বের ১২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৩তম সামরিক শক্তি এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৮তম সামরিক শক্তি । তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ সামরিক শক্তিধর দেশ ।
⮚ বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে NVG প্রযুক্তি : সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে Night Vision Goggles (NVG)। এটা চোখে দিলে বৈমানিকরা অন্ধকারের মধ্যে নিচের সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পান। যেসব পাইলট হেলিকপ্টার চালান, তাদের কাছে দিন রাত অভিন্ন করে এ NVG প্রযুক্তি।
⮚ বাংলাদেশের সামরিক শক্তির উৎস:
- বৃহৎ সেনাবাহিনী: বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ১.৬ লক্ষ।
- আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র: বাংলাদেশ ক্রমশ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করছে।
- প্রশিক্ষিত সেনা: বাংলাদেশের সেনারা দেশে ও বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ লাভ করে।
- অভিজ্ঞতা: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সেনারা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ১৯৭২ সালে গঠিত এই বাহিনী বাংলাদেশের ৪,৪২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বে এর নাম ছিল ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্স (ইপিআর)। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালে এর নাম হয় 'বাংলাদেশ রাইফেলস' (বিডিআর)। ২০১১ সালে পুনরায় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ' (বিজিবি)।
- বিডিআর (BDR) এর বর্তমান নাম : Border Guard Bangladesh
- বিজিবি (BGB) একটি : আধা সামরিক বাহিনী
- বিজিবির কাজ : দেশের সীমান্ত রক্ষা করা, চোরাচালান দমন করা এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন
- বিজিবি এর গঠনকালীন নাম : রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ান (১৭৭৫ সালে)
- বিজিবির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১১
- মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবধারী বিজিবি সদস্য : ২ জন। যথা-ল্যান্সনায়ক নূর মোহাম্মদ শেখ এবং ল্যান্সনায়ক মুন্সি আব্দুর রউফ
- বিজিবি এর সদর দপ্তর : পিলখানা, ঢাকা
- বিজিবি এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র : বাইতুল ইজ্জতে
- পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ হয় : ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯
- বিডিআর হিসেবে দায়িত্বকাল : ১৯৭২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত
বাংলাদেশ পুলিশ
বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাস ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগে শুরু হয়। ১৭৯৯ সালে 'বেঙ্গল রেগুলেশন III' প্রণয়নের মাধ্যমে 'বেঙ্গল পুলিশ' নামে একটি নিয়মিত পুলিশ বাহিনীর সূচনা হয়। পাকিস্তান আমলে পুলিশ বাহিনীকে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান দুই ভাগে ভাগ করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানে পুলিশের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের আধিপত্য ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পুলিশের একটি অংশ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগদান করে। 'পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন' গঠিত হয় এবং তারা মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতার পর 'বাংলাদেশ পুলিশ' নামে পুলিশ বাহিনীর নতুন যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের বৃহত্তম আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। পুলিশের বিভিন্ন বিশেষায়িত শাখা রয়েছে যেমন - CID, RAB, BGB, CMP, Tourist Police ইত্যাদি।
- 'POLICE' শব্দটির উৎপত্তি : পর্তুগিজ শব্দ হতে
- 'POLICE' শব্দটির পূর্ণরূপ : P = Polite, O = Obedient , L = Loyal, I = Intelligent C = Courageous, E = Efficient
- পাক-ভারত উপমহাদেশে পুলিশ সার্ভিস চালু হয় : ১৮৬১ সালে,লর্ড ক্যানিংয়ের শাসনামলে
- বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন পরিচালিত হয় : ১৮৬১ সালের প্রণীত রেগুলেশন দ্বারা
- বাংলাদেশ পুলিশ : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন
- বাংলাদেশ পুলিশের মনোগ্রাম : একপাশে ধানের শীষ ও অপর পাশে গমের শীষ মাঝখানে ভাসমান পালতোলা নৌকা, শীর্ষদেশে শাপলা ফুল এবং নীচে বাংলায় লেখা পুলিশ
- বাংলাদেশ পুলিশের মূলনীতি : শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি
- বাংলাদেশ পুলিশের অঞ্চলগুলো হল : রেঞ্জ, জেলা, সার্কেল, থানা
- পুলিশের পদমর্যাদার ক্রম :
১) ইন্সপেক্টর জেনারেল (IG),
২) এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল (Add IG),
৩) ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (DIG)
৪) এডিশনাল ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (Add DIG)
৫) সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (SP)
৬) এডিশনাল সুপরিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (Add SP)
৭) সনর হালদায় সুতাতলাটিনয়েন্ট অব পুলিশ (Senor ASP)
৮) অ্যাসিট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (ASP)
৯) ইন্সপেক্টর
১০) সাব-ইনসপেক্টার (SI)
১১) অ্যাসিসটেন্ট সাব ইনসপেক্টর (ASI)
১২) হাবিলদার
১৩) নায়েক
১৪) কনস্টেবল - পুলিশের সর্বোচ্চ পদকর্তার পদবী : IGP (Inspector General of Police)
- পুলিশ রেঞ্জের প্রধান কর্মকর্তা : ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (DIG)
- জেলা পুলিশ প্রধানের পদবী : সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (SP)
- থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা : অফিসার ইন চার্জ (OC)
- মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান : পুলিশ কমিশনার
- পুলিশ বাহিনীর পুরস্কার : বীরত্ব পুরস্কার এবং জেনারেল সার্ভিস মার্ক (GS-Mark)
- পুলিশ বাহিনীর বীরত্ব পুরস্কার : ৩ টি। যথা- বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল, প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল ও আইজি বেস্ট মেডেল
- পুলিশের ঘুষ ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠন করা হয়েছে : কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সেল
- বাংলাদেশের অস্ত্র কারখানা : গাজীপুরে অবস্থিত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে।
⮚ মেট্রোপলিটন পুলিশ : বাংলাদেশ মেট্রোপলিটন পুলিশ হলো বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষ শাখা যা মহানগর এলাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করে। মেট্রোপলিটন পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হলেন কমিশনার। কমিশনারের অধীনে রয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, সহকারী কমিশনার, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, এসআই, কনস্টেবল ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী। বাংলাদেশ মেট্রোপলিটন পুলিশ আছে ৮টি নগরীতে। যথা: ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, গাজীপুর ও রংপুর। ঢাকা মহানগরীর মেট্রোপলিটন পুলিশ কে সংক্ষেপে বলা হয় ডিএমপি (DMP) । ১৯৭৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারী ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ডিএমপির কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান । ডিএমপি ৫০টি থানা, ১০টি জোন, ১৭টি বিভাগ এবং ২৭টি বিশেষ শাখার সমন্বয়ে গঠিত। সর্বশেষ হাতিরঝিল থানা ৭- ৭-২০১৮ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
⮚ নৌ পুলিশ (River Police) : বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট:
- নৌ পুলিশ গঠন: ১২ নভেম্বর ২০১৩
- যে অঞ্চলগুলোতে পুলিশ ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছেঃ ঢাকা, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম।
- বর্তমানে নৌ থানার সংখ্যাঃ ১৭টি; • সদরঘাট, ঢাকা • আমিনবাজার, ঢাকা • সদর, নারায়ণগঞ্জ • পাটুরিয়াঘাট, মানিকগঞ্জ • সদর, সিরাজগঞ্জ • সদর, বরিশাল • বাহাদুরাবাদঘাট, জামালপুর • ঢুষমারা। কুড়িগ্রাম • আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া • সদর, চাঁদপুর • কেএমপি সদর, খুলনা • নলিয়ান, খুলনা • বুড়িগোয়ালিনী, সাতক্ষীরা • চাঁদপাই, বাগেরহাট • পূর্ব ইলিশী, ভোলা • সদর, পটুয়াখালী • সদরঘাট, চট্টগ্রাম।
- পূর্বে ছিল: ২টি; বাহাদুরাবাদ ঘাট, জামালপুর ও ঢুষমারা, কুড়িগ্রাম।
বাহিনী | অভিষেক | প্রথম নিয়োগ |
---|---|---|
বাংলাদেশ পুলিশ | ৮ জুন ১৯৭৪ | ১৪ জন |
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ | ২ জন |
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী | ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ | ৮৭৯ জন |
বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী | ৩০ মে ২০১৬ | ৪৪ জন |
বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) | ৫ জুন ২০১৬ | ৯৭ জন |
র্যাব (RAB)
র্যাব (RAB) : বাংলাদেশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত বাহিনী যা ২০০৪ সালের ২৬ শে মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। সন্ত্রাস দমন, জঙ্গিবিরোধী অভিযান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। র্যাব বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর চেীকষ সদস্যদের ডেপুটেশন নিয়ে গঠিত। র্যাব সদস্যদের জন্য আধুনিক ও উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণে কাউন্টার-টেরোরিজম, গেরিলা যুদ্ধ, অস্ত্র ব্যবহার, তদন্ত, ফার্স্ট এইড ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।
- র্যাব (RAB) এর পূর্ণরূপ : Rapid Action Battalion
- র্যাব (RAB) গঠনের জন্য সংস্কার করা হয় : আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এ্যাক্ট-১৯৭৯
- জাতীয় সংসদে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) আইন পাস হয় : ৯ জুলাই, ২০০৩
- র্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে : ২৬ মার্চ, ২০০৪
- র্যাব (RAB) এর পূর্বনাম : RAT (Rapid Action Team)
- র্যাবের সদর দপ্তর : কুর্মিটোলা, ঢাকা
- র্যাবের শ্লোগান : বাংলাদেশ আমার অহঙ্কার
- র্যাবের ব্যাটালিয়ন : ১৭টি
- পাহাড়ি' ব্যাটালিয়ন : কক্সবাজার ও পার্বত্য তিন জেলা নিয়ে গঠিত ব্যাব-১৫ কার্যক্রম শুরু করবে, যার নাম হবে 'পাহাড়ি' ব্যাটালিয়ন।
- উপকূল' ব্যাটালিয়ন : সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চল ঘিরে যে ব্যাটালিয়ন চালু হবে তার নাম হবে। 'উপকূল' ব্যাটালিয়ন।
বাংলাদেশের স্পেশাল বাহিনী
বাংলাদেশের স্পেশাল বাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি প্রধান স্পেশাল বাহিনী হলো:
- স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF)
- প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (PGR)
⮚ স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF): তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদের তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রপতি ও বিদেশ থেকে আগত রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তার জন্য ১৫ই জুন ১৯৮৬ সালে “প্রেসিডেন্ট সিকিউরিটি ফোর্স” নামে একটি বিশেষ নিরাপত্তা দল গঠন করেন। পরবর্তিতে বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি চালু হওয়ার পর ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সালে এর নাম পরিবর্তন করে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নামকরণ করা হয়। এটি রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও সরকারঘোষিত VIP ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদান করে । SSF এর পূর্ণরূপ Special Security Force.
⮚ প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (PGR) : এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী । রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স ’ নামে এই বাহিনী গঠন করেন। ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রপতি হুসেন মুহাম্মদ এরশাদ এটি পূনর্গঠন করে এর নাম রাখে ‘ প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট ‘ । PGR এর পূর্ণরূপ President Guard Regiment.
বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা
বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি দেশের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হল:
নাম | পূর্ণরূপ | যে সংস্থার গোয়েন্দা |
---|---|---|
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা | National Security Intelligence (NSI) | বাংলাদেশ সরকার |
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর | Directorate General of Forces Intelligence (DGFI) | সামরিক বাহিনী |
সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা | Directorate of Military Intelligence (DMI) | সামরিক বাহিনী |
অপরাধ তদন্ত বিভাগ | Criminal Investigation Department (CID) | বাংলাদেশ পুলিশ |
বিশেষ শাখা | Special Branch (SB) | বাংলাদেশ পুলিশ |
সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স ইউনিট | Central Intelligence Unit (CIU) | জাতীয় রাজস্ব বোর্ড |
ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট | Financial Intelligence Unit | বাংলাদেশ ব্যাংক |
ডিরেক্টরেট অফ নেভাল ইন্টেলিজেন্স | Directorate of Naval intelligence | বাংলাদেশ নৌ বাহিনী |
অফিস অফ এয়ার ইন্টেলিজেন্স | Office of air intelligence | বাংলাদেশ বিমান বাহিনী |
বর্ডার গার্ড সিকিউরিটি ব্যুরো | Border Guard Security bureae | বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ / বিজিবি |
জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা
১৯ মার্চ ২০১৮ মন্ত্রিসভায় জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়। নীতিমালাটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় করা হয়েছে।
⮚ লক্ষ্য : জাতীয় অগ্রগণ্যতা, আইনি কাঠামো ও সম্পদের ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকায় জনমতের প্রতিফলন ঘটানো। প্রতিরক্ষা নীতিমালা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের প্রতিরক্ষা পরিবেশ সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করবে। সার্বিক পরিসরে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের চলমান ও পরিকল্পিত সক্ষমতা এবং ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা দেবে।
⮚ নীতিমালার হাইলাইটস :
- নিরাপত্তা বিষয়ক একটি জাতীয় কমিটি থাকবে। সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে সরকারের মনোনীত মন্ত্রী এবং মনোনীত সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠন হবে। প্রধানমন্ত্রী এ কমিটির সভাপতি থাকবেন।
- শান্তিপূর্ণ যে কোনো সংকট মেটাতে কূটনৈতিক তৎপরতা, আলাপ-আলোচনা ও আন্তর্জাতিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলেই সর্বশেষ পন্থা হিসেবে সামরিক শক্তি প্রয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
- প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালিত হবে প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। জাতীয় সংসদ আগের মতোই প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করবে।
- যুদ্ধকালীন আধা-সামরিক ও সহায়ক বাহিনী সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড থাকবে। বিজিবি, কোস্টগার্ড, বিএনসিসি, পুলিশ বাহিনী, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অন্যান্য প্রতিরক্ষা দল ক্রান্তিকালীন সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করবে।
- সংকটকাল বা ক্রান্তিকাল ঠিক করবেন সরকারপ্রধান।
- জাতীয় নিরাপত্তার নেতৃত্ব থাকবে সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য সকল জাতীয় শক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তায় একত্রিত করা হবে।
⮚ নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার: ১০ এপ্রিল ২০১৬ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার রাজেন্দ্রপুরে নির্মিত নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করা হয়। ২৯ জুলাই ২০১৬ পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের আনুষ্ঠানিকভাবে এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে ইতিহাসের সাক্ষী ২২৮ বছরের পুরানো ঠিকানাকে বিদায় জানিয়ে নতুন ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীরে কেরানীগঞ্জ উপজেলাধীন তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরের বাঘৈর ও পশ্চিমাদি মৌজায় অবস্থিত নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ১৯৪.৪১ একর আয়তনের এ কেন্দ্রীয় কারাগারটি এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম মডেল কারাগার। এর নকশাও আধুনিকমনস্ক । এর বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪,৫৯০ জন ।