স্বাধীনতার পর থেকে খেলাধুলা বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, তীরন্দাজ, শীর্ষ আসনে পৌঁছাতে না পারলেও; অ্যাথলেটিকস, সাঁতার, জিমন্যাস্টিক, ভারোত্তোলন, শরীরচর্চা, কুস্তি ইত্যাদি খেলায় বাংলাদেশী ক্রীড়াবিদরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন।
অতীত:
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে বাংলাদেশের খেলাধুলার বিকাশ ছিল সীমিত। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি ছাড়া অন্যান্য খেলাধুলার প্রচলন ছিল না। স্বাধীনতার পর থেকে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টায় খেলাধুলার বিকাশে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
বর্তমান:
বর্তমানে ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দেশে ক্রিকেট পরিচালনা করে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-র পূর্ণ সদস্য। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সিরিজে বাংলাদেশ নিয়মিত অংশগ্রহণ করে এবং সফলতা অর্জন করে।
ফুটবল বাংলাদেশের আরেক জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) দেশে ফুটবল পরিচালনা করে। বাংলাদেশ ফিফা-র সদস্য এবং বিশ্বকাপ তথা এশিয়ান কাপের যোগ্যতাসপর্ধায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে।
হকি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলা। বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বিএফএফ) দেশে হকি পরিচালনা করে। বাংলাদেশ অতীতে হকিতে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে।
কাবাডি বাংলাদেশের আরেক জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন (বিকেএফ) দেশে কাবাডি পরিচালনা করে। বাংলাদেশ এশিয়া কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, তীরন্দাজ, অ্যাথলেটিকস, সাঁতার, জিমন্যাস্টিক, ভারোত্তোলন, শরীরচর্চা, কুস্তি ইত্যাদি খেলায় বাংলাদেশী ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছেন।
ভবিষ্যৎ:
বাংলাদেশের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। যুবা ক্রীড়াবিদদের মধ্যে প্রতিভা ও আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো খেলাধুলার বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা বাংলাদেশের খেলাধুলার উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে:
- খেলাধুলার জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা।
- গ্রাসরুট স্তরে খেলাধুলার বিকাশে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া।
- প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা।
- যুবা ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রণোদনা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা।
- খেলাধুলার প্রচার ও প্রসার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
খেলাধুলা জাতির মনোবল ও ঐক্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের খেলাধুলার বিকাশে সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ একদিন খেলাধুলার বিশ্ব মানচিত্রে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।