বাংলাদেশের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের ধারক ও বাহক। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন - এই সকলের প্রভাব বাংলার স্থাপত্য ও ভাস্কর্যশৈলীতে লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য শুধু আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য আপনাকে অতীতের স্মৃতিতে ডুবিয়ে দেবে, বর্তমানের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ করে দেবে এবং ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।
- ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ভাস্কর্য
- স্বাধীনতা স্মরণে ভাস্কর্য
- এক নজরে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ভাস্কর্য
- নতুন কিছু ভাস্কর্য
- আল্লাহু চত্বর
- আসমাউল হুসনা
- রাজশাহী কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল
- বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল
- বঙ্গবন্ধু কর্নার আবক্ষ ভাস্কর্য পুনঃস্থাপন
- বাচ্চুর রূপালী গিটার
- রাজসিক বিহার
- নাটোরে বঙ্গবন্ধুর দুই ম্যুরাল
- পতাকা ভাস্কর্য
- ভোলায় স্বাধীনতা জাদুঘর
- দেশের প্রথম কুরআন ভাস্কর্য
- যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য
- বীরত্ব অবিনশ্বর
- বীর: (সর্বোচ্চ উচ্চতার ভাস্কর্য)
- দৃপ্ত শপথ
- ঐতিহ্য নারায়ণগঞ্জ ভাস্কর্য
ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ভাস্কর্য
ভাষা আন্দোলন শুধুমাত্র বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিল না, বরং এটি ছিল এক নতুন চেতনার সূচনা। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি আত্মসচেতনতা লাভ করে এবং তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করার সাহস অর্জন করে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের জাতীয় পরিচয় সম্পর্কে সচেতন হয় এবং তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিরা বুঝতে পারে যে, তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের অবশ্যই স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।
বলা হয়ে থাকে, ভাস্কর্য বুদ্ধিমত্তার শিল্প। বাংলা ভাষার ইতিহাসকে তুলে ধরতে দেশের খ্যাতনামা অনেক ভাস্কর্যশিল্পীই তৈরি করেছেন ভাস্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ। সেগুলোর মধ্যে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ভাস্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল:
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
শহীদ মিনার ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ। এটি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থিত। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে শহীদদের স্মরণে একটি শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ মিনারটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ঐ দিন সকালেই শহীদ শফিউরের পিতা শহীদ মিনারটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু পুলিশ ও সেনাবাহিনী ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে। অবশেষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতি দেওয়ার পর ১৯৫৭ সালে পুনরায় শহীদ মিনারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ ব্যক্তিত্ব আবুল বরকতের মাতা হাসিনা বেগম নতুন শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে। ১৯৭৩ সালে শহীদ মিনারটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির স্থপতি হলেন হামিদুর রহমান। যুক্তরাজ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দুইটি প্রতিকৃতি স্থাপিত হয়েছে।
'মোদের গরব' ভাস্কর্য
"মোদের গর্ব" স্থপতি অখিল পাল তৈরি করা একটি খ্যাতিমান ভাস্কর্য। এটি বাংলাদেশের ঢাকায় রমনা পার্কে অবস্থিত। এই ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত। এটি ঢাকার বাংলা একাডেমী ভবনের সামনে অবস্থিত । ভাষা শহীদদের সম্মানে ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়। ভাষা শহীদ আবদুস সালাম, রফিকউদ্দিন আহমদ, আবদুল জব্বার, শফিউর রহমান এবং আবুল বরকতের ধাতব মূর্তিতে এটি গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ড. ফখরুদ্দীন আহমদ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।
'অমর একুশে ' ভাস্কর্য
এক মায়ের কোলে শায়িত ছেলে এবং তার পেছনে স্লোগানরত এক ব্যক্তি। এমনই প্রতিকৃতি ‘অমর একুশ’ ভাস্কর্যে। শিল্পী জাহানারা পারভীন ভাস্কর্যটি তৈরি করেন। এর অবস্থান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেইট এর সামনে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার পাশে। ভাস্কর্যটির স্তম্ভসহ ফিগারের মোট উচ্চতা ৩৪ ফুট। "অমর একুশ" ভাস্কর্যটি বাংলা ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ। এটি শহীদদের ত্যাগ ও বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। এছাড়াও এটি নতুন প্রজন্মকে মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনার
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। এটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত। শহীদ মিনারটি জাতীয় স্মৃতিসৌধ হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ১৯৫২ সালকে সকল অর্জনের ভিত্তি বিবেচনা করে এর ভিত্তিমঞ্চের ব্যাস রাখা হয়েছে ৫২ ফুট এবং ৭১ সালের অবিস্মরণীয় মর্যাদার প্রতি সম্মান জানিয়ে ভিত্তিমঞ্চ থেকে উন্মুক্ত আকাশগামী স্তম্ভত্রয়ের উচ্চতা রাখা হয়েছে ৭১ ফুট। দেশ বিভাগোত্তর বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের স্বাধীনতা অভিমুখী নানা আন্দোলনে তাৎপর্যমন্ডিত ৮ টি বছর- ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৭১ কে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ভিত্তিমঞ্চে ব্যবহার করা হয়েছে ৮টি সিঁড়ি যা ধারাবাহিকতার প্রতীক। এই স্থাপত্যকর্মটির নকশা করেছেন স্থপতি রবিউল হুসাইন। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সালে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. খন্দকার মুস্তাহিদূর রহমান এটি উদ্বোধন করেন।
স্মৃতির মিনার ভাস্কর্য
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভবনের সামনে অবস্থিত "স্মৃতির মিনার" ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত। চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমান এই ভাস্কর্যটি তৈরি করেন । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের "স্মৃতির মিনার" ভাস্কর্যটি "মোদের গর্ব" ভাস্কর্যের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে ।
শহীদ মিনার (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অবস্থিত "শহীদ মিনার" বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত। ১৯৭৫ সালে নির্মিত এই স্থাপত্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ। ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলী এর উদ্বোধন করেন। দেশের অন্যান্য শহীদ মিনারের গড়নের দিক থেকে আলাদা এটি। ছয় কোণা প্ল্যাটফর্মের ওপর লম্বা চারটি স্তম্ভ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারটি। যার স্থপতি শিল্পী মুর্তজা বশীর । শহীদ মিনারটি ষড়ভুজ আকৃতির একটি উঁচু ভিত্তির উপর স্থাপিত। ভিত্তি থেকে উঁচু হয়ে চারটি স্তম্ভ উপরে একত্রিত হয়ে একটি গম্বুজ তৈরি করেছে। স্তম্ভগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চার মূল নীতির প্রতীক: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। ভিত্তির চারপাশে কৃত্রিম মাটির ঢিপ তৈরি করা হয়েছে এবং সেখানে ফুলের বাগান রয়েছে।
জননী ও গর্বিত বর্ণমালা
একজন মা তার গুলিবিদ্ধ সন্তানের মৃতদেহ কোলে নিয়ে হাসিমুখে প্রতিবাদ করছেন। ভাস্কর্যটি মনোযোগ সহকারে দেখলে যে কারও চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়বে। মা ও ছেলেকে ঘিরে আছে লাল ও সবুজ রঙের দুটি বৃত্ত। এর মাধ্যমে লাল-সবুজের বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার বিষয়টি প্রতীকী অর্থে বোঝানো হয়েছে। ভাস্কর্যটির নাম ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা’। ১৬ ফুট উচ্চতার এ ভাস্কর্যে আরও আছে বাংলা বর্ণমালা এবং সংখ্যা। রাজধানীর পরীবাগের মাথায় বিটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ভাস্কর্যটির অবস্থান। ভাস্কর মৃণাল হক ভাস্কর্যটি তৈরি করেছেন।
- দেশের বাইরে প্রথম শহীদ মিনার - লন্ডন, ইউকে। ১৯৯০ সালে এটি নির্মাণের জন্য আবেদনের পর নির্মাণ শেষ হয় ১৯৯৬ সালে।
- দেশের বাইরে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার টোকিও, জাপান। ২০০৫ সালে নির্মাণ শুরু করে ২০০৬ সালে উদ্বোধন করা হয়।
- ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০০৬ সালে সিডনীতে নির্মিত হয় দেশের বাইরে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ।
- মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মাঝে প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয় - ওমানে ২০০৫ সালে।
- নেদারল্যান্ডসে শহীদ মিনার: নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে নির্মিত হতে যাচ্ছে স্থায়ী শহীদ মিনার। ১১ অক্টোবর ২০১৭ সবুজ ও সুবিশাল জাউদার পার্কে শহীদ মিনারের জন্য একটি স্থান বরাদ্দ করে নগর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়।
স্বাধীনতা স্মরণে ভাস্কর্য
বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্মরণে ভাস্কর্য হলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ভাস্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ। এ ভাস্কর্যগুলো নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের স্মৃতিকে লালন করার জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার চেতনাকে প্রবাহিত করার জন্য। স্বাধীনতাযুদ্ধ স্মরণে নির্মিত এসব অসংখ্য ভাস্কর্য রাজধানী শহর ছাড়িয়ে দেশের সর্বত্রই প্রায় রয়েছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হল:
জাগ্রত চৌরঙ্গী
জাগ্রত চৌরঙ্গী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত প্রথম ভাস্কর্য। এটি জয়দেবপুর চৌরাস্তায় অবস্থিত। এর স্থপতি হলেন শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক।
অপরাজেয় বাংলা
অপরাজেয় বাংলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য। এটি নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালেদ। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলার নারী- পুরুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বিজয়ের প্রতীক এই ভাস্কর্য। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর উদ্বোধন করা হয় ১৯৭৯ সালে। ৬ ফুট বেদির নির্মিত এ ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১২ ফুট।
সাবাস বাংলাদেশ
সাবাস বাংলাদেশ বাংলাদেশের স্মৃতিবিজড়িত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই ভাষাটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত। এর স্থপতি শিল্পী নিতুন কুন্ডু। ১৯৯২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন।
বিজয় কেতন
ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নাম 'বিজয় কেতন'। এর মূল ফটকে অবস্থিত ভাষ্কর্যটির নামও 'বিজয় কেতন'। এই ভাষ্কর্যে রয়েছে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার মূর্তি: এদের একজন হলেন বাংলাদেশের পতাকাবাহী নারী।
- প্রতিষ্ঠিত : ২০০০ সালে
- গ্যালারি : ছয়টি
- প্রদর্শন করা হয় : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক, সেক্টর কমান্ডারদের আলোকচিত্র ও পরিচিতি, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত রাইফেল, কামান, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বহনের কফিন ইত্যাদি।
স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সির সড়কদ্বীপে রয়েছে 'স্বোপার্জিত স্বাধীনতা' ভাস্কর্যটি। ১৯৮৮ সালের ২৫ মার্চ এ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করা হয়। এ ভাষ্কর্যের নির্মাতা চারুকলা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক শামীম শিকদার।
স্বাধীনতা সংগ্রাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডের সড়ক দ্বীপে 'স্বাধীনতা সংগ্রাম' ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ভাস্কর্য। ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন। এ ভাস্কর্যের নির্মাতা শামীম শিকদার। বাঙালির ইতিহাসে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যন্ত সমস্ত বীরত্বকে ধারণ করে তৈরি করা হয়েছে এ ভাস্কর্য।
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে প্রবাসী সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৯৮৭ সালের ১৭ এপ্রিল এখানে উদ্বোধন করা হয় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধটির ডিজাইনের নকশা করেন স্থপতি তানভীর কবীর। এ স্মৃতিসৌধের কংক্রিট নির্মিত ত্রিকোণাকার দেয়াল ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ২৩ বছরের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক। ১৭ এপ্রিল ১৯৮৭ এ স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
ঢাকা শহরের পশ্চিমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশেই এই স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রখ্যাত সন্তানদের হত্যা করে এই স্থানে পরিত্যক্ত ইটের ভাটার পশ্চাতে ফেলে রাখা হয়েছিল। এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য ইটের ভাটার আদলে এই স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। এর স্থপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও জামি আল শাফি।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধ
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ঢাকার মীরপুরে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নির্বিচারে এদেশের সূর্যসন্তানদের হত্যা করে। ১৯৭২ সালের ২২ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সৌধটি উদ্বোধন করেন। এর স্থপতি মোস্তফা হারুন কুদ্দুস হিলি।
শিখা অনির্বান
শিখা অনির্বান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ । যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সৈনিকদের স্মৃতিকে জাতির জীবনে চির উজ্জ্বল করে রাখার জন্য এই স্মৃতিস্তম্ভে সার্বক্ষণিকভাবে শিখা প্রজ্বলন করে রাখা হয়। ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় এটি অবস্থিত। এর স্থাপত্য পরিকল্পনা করেছে ঢাকা ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।
স্মৃতি অম্লান
স্মৃতি অম্লান রাজশাহী শহরের ভদ্রা এলাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ। ১৯৯১ সালের ২৬ মার্চ এর উদ্বোধন করা হয়। এর স্থপতি রাজিউদ্দিন আহমদ।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতিভবন
"বঙ্গবন্ধু স্মৃতিভবন" কলকাতায় অবস্থিত। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের বেকার হোস্টেলের নবনির্মিত বর্ধিত ভবনের নাম রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু স্মৃতিভবন ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের তৎকালান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতিভবনের নামফলক উন্মোচন করেন। পাশাপাশি বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের সামনে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষমূর্তি এবং ২৩ ও ২৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে বঙ্গবন্ধু সংগ্রহশালার উদ্বোধন করা হয়।
এক নজরে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ভাস্কর্য
ভাস্কর্য | স্থপতি/ ভাস্কর | অবস্থান |
---|---|---|
অপরাজেয় বাংলা | সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালেদ | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্বরে অবস্থিত। উদ্বোধন করা হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৯ |
বীরের প্রত্যাবর্তন | সুদীপ্ত মল্লিক সুইডেন | বাড্ডা, ঢাকা |
প্রত্যাশা | মৃণাল হক | ফুলবাড়ীয়া, ঢাকা |
স্বাধীনতা | হামিদুজ্জামান খান | কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ঢাকা |
সংশপ্তক | হামিদুজ্জামান খান | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় |
৭১ এর গণহত্যা ও মুক্তিবৃদ্ধের প্রস্তুতি | ভাস্কর রাশা | জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় |
মুক্তবাংলা | রশিদ আহমেদ | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় |
স্মারক ভাস্কর্য | মুর্তজা বশীর | চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রজন্ম | কারমাইকেল কলেজ | |
বিজয়-৭১ | শ্যামল চৌধুরী | বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় |
চেতনা-৭১ | মোহাম্মদ ইউনুস | পুলিশ লাইন, কুষ্টিয়া |
চেতনা-৭১ | মৃনাল হক | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। |
জাগ্রত ৭১ | দামপাড়া পুলিশ লাইন, চট্টগ্রাম | |
অপরাজেয় ৭১ | ঠাকুরগাঁও | |
প্রত্যয়-৭১ | মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল | |
অঙ্কুরিত যুদ্ধ-৭১ | মুন্সিগঞ্জে | |
অদম্য একাত্তর | মানিকগঞ্জে অবস্থিত ভাস্কর্য। | |
স্মৃতি ৭১ | অধ্যাপক সৈয়দ সাইফুল কবীর | মহান মুক্তিযুদ্ধের উষালগ্নে ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের প্রবেশপথ কুমিরায় পাকিস্তান বাহিনীর সাথে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাঙালি সৈন্য ও স্থানীয় জনতার প্রথম সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে নির্মাণ করা হয় 'স্মৃতি ৭১' ভাস্কর্য। ২১ এপ্রিল ২০১৮ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। |
দুর্জয় | মৃনাল হক | রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা |
রক্তসোপান | রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস, গাজীপুর | |
অঙ্গীকার | সৈয়দ আবদুল্লাহ খালেদ | চাঁদপুর |
বিজয় উল্লাস | কুষ্টিয়া পৌরসভায় অবস্থিত | |
বিজয় গাঁথা | রংপুর সেনানিবাসে অবস্থিত। ১৭ মার্চ ২০১৫ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ ভাষ্কর্যটির ফলক উন্মোচন। করা হয়। রংপুর সিটি করপোরেশনের আর্থিক সহযোগিতায় ও সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিজয় গাঁথা' ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। | |
'বীর বাঙালি' | যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে | |
যূথবদ্ধ:সংগ্রামে- শান্তিতে-সৃষ্টিতে | নরসিংদীর সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য। | |
অনুপ্রেরণা ১৯ | মুহম্মদ আরিফুজ্জামান | গাজীপুর সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে নির্মিত হয়েছে অনুপ্রেরণা ১৯' নামের একটি ভাস্কর্য। এতে ফুটিয়ে তোলা হয় জেলায় মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের স্মৃতিগেট। ১৯ মার্চ ১৯৭১ গাজীপুরেই প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম শুরু হয়। ৬ অক্টোবর ২০১৮ 'অনুপ্রেরণা ১৯' উদ্বোধন করা হয়। |
'জাগ্রত চৌরঙ্গী' | শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক | গাজীপুর |
নতুন কিছু ভাস্কর্য
ভাস্কর্য শিল্প বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশে খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের ভাস্কর্যও আবিষ্কৃত হয়েছে যা থেকে বোঝা যায় সুদূর অতীতকাল থেকে এখানে ভাস্কর্যশিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মূর্তি ও ভাস্কর্য বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গৌরব বহন করে চলেছে। নিচে নতুন কিছু ভাস্কর্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হল:
আল্লাহু চত্বর
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরে মহান আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক ৯৯টি নাম খচিত দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্য স্থাপনকৃত এ চত্বরটির নাম দেয়া হয়েছে আল্লাহু চত্বর। চত্বরটির মাঝখানে সু-বিশাল একটি পিলারে চারপাশে খোদাই করে লেখা হয়েছে আল্লাহর ৯৯টি নাম এবং চূড়ায় বড় করে লেখা হয়েছে 'আল্লাহু'। ভূমি থেকে এর উচ্চতা ৩০ ফুট এবং ব্যাস ১৪ ফুট। ভাস্কর্যটির ড্রয়িং ও ডিজাইন করেছেন কুমিল্লা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন।
আসমাউল হুসনা
৩০ জানুয়ারি ২০১৯ মুন্সিগঞ্জ শহরে মহান আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নাম সংবলিত একটি দৃষ্টিনন্দন স্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়। ২৯.৬ ফুট উচ্চতার স্তম্ভটির নাম দেয়া হয় 'আসমাউল হুসনা', যার অর্থ আল্লাহর সুন্দরতম নাম।
রাজশাহী কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাজশাহী কলেজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ম্যুরাল উন্মোচন করা হয়। কলেজের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম অংশে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই দৃষ্টিনন্দন প্রতিকৃতিটি নির্মিত হয়। কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ম্যুরালটির উচ্চতা ২৫ ফুট ও প্রস্থ ২২ ফুট। ৪৬ ফুট উচ্চতা ও ৩৩ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট দেশের বৃহত্তম আবক্ষ মুরালটি রয়েছে চট্টগ্রামে।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল
রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে নির্মাণ হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল। এটি নির্মাণ হলে দেশের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে সুন্দর ম্যুরাল হবে। এতে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনে বঙ্গবন্ধুকে জীবন্ত করে তোলা হবে। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ম্যুরালটির নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (UGC) প্রবেশ মুখে স্থাপন করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল, যা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ উদ্বোধন করা হয়। ১৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রন্থের ম্যুরালটি টাইলস দিয়ে তৈরি করা হয়।
বঙ্গবন্ধু কর্নার আবক্ষ ভাস্কর্য পুনঃস্থাপন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার রাফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের ঐতিহ্যবাহী বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষের সামনে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নতুন একটি আবক্ষ ভাস্কর্য পুনঃস্থাপন করা হয়। এর আগে এ বেকার হোস্টেলে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ প্রথম বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মুখমনণ্ডল যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। কলকাতার ভাস্কর। বঙ্গবন্ধুর নতুন ভাস্কর্যটি তৈরি করেন ঢাকার শিল্পী লিটন পাল রনি। ৩ আগস্ট ২০১৯ নতুন ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা হয়।
বাচ্চুর রূপালী গিটার
চন্দ্রগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে স্থাপন করা হয় ১৮ ফুট উচ্চতার রূপালী গিটার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উদ্বোধন করা হয়। স্টেইনলেস স্টিলের পাত দিয়ে তৈরি গিটারটিতে রয়েছে ৬টি তার। গিটারের চারপাশে রয়েছে দৃষ্টি নন্দন ফোয়ারা।
রাজসিক বিহার
২০০৮ সালের ১৯ জানুয়ারিতে ঢাকা নগরীর ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ-এর শেরাটন হোটেল (বর্তমান নাম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল) এর সামনে নির্মাণ করা হয় 'রাজসিক বিহার" নামক একটি ভাস্কর্য, যার ভাস্কর হলেন মৃণাল হক।
নাটোরে বঙ্গবন্ধুর দুই ম্যুরাল
নাটোর শহরের দুই প্রবেশ পথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি মুরাল স্থাপন করা হয়েছে। ১০ জুলাই ২০১৮ মুরাল দুটি উদ্বোধন করা হয়। নাটোর শহরের প্রবেশ পথ উত্তরা গণভবন ও নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সংযোগস্থলে একটি এবং শহরের বনবেলঘড়িয়া বাইপাস মোড়ে বঙ্গবন্ধুর আরও একটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। পাঁচ ফুট প্রস্থ ও ছয় ফুট উচ্চতার ম্যুরাল দুটি ১৭ ফুট দৈর্ঘোর ১৬ ফুট উচ্চতার নৌকায় স্থাপন করা হয়।
পতাকা ভাস্কর্য
২ মার্চ ২০১৮ দেশের প্রথম পতাকা ভাস্কর্য "পতাকা একাত্তর" উদ্বোধন করা হয়। এটি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। এর ভাস্কর ইমরান হোসেন ও রূপন রায়। নামকরণ করেন আলমগীর টুলু
ভোলায় স্বাধীনতা জাদুঘর
২৫ জানুয়ারি ২০১৮ বাঙালির ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের দুর্লভ তথ্যচিত্র সংরক্ষণে ভোলার উপশহর বাংলাবাজারে স্থাপিত স্বাধীনতা জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের অন্যতম গবেষণাগার হিসেবে নির্মিত হয়। এটি আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনের ৮০ বছরের ইতিহাসের ধারাবাহিক দুর্লভ সংরক্ষণ রয়েছে এখানে। ভেতরের তিনতলাতেই রয়েছে এর বিন্যাস। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা দেখতে ও জানতে পারবে নতুন প্রজন্ম। এ জাদুঘরে তুলে ধরা হয়েছে বাঙালির লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।
দেশের প্রথম কুরআন ভাস্কর্য
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সদরের কদমতলা মোড়ে স্থাপিত হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের আদলে দেশের প্রথম কুরআন ভাস্কর্য। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র কামরুল হাসান শিপন এ ভাস্কর্যটির ডিজাইন করেন। উন্নতমানের গ্রাস ফাইবার দ্বারা তৈরি নান্দনিক ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১৬ ফুট এবং গ্রন্থ ৮ ফুট। কসবা পৌরসভার উদ্যোগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (ADB) অর্থায়নে এ ভাষ্কর্য নির্মিত হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ৭,৬৮,৫১৬ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য
১ অক্টোবর ২০১৭ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি'র বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়। ব্রোঞ্জে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর কৃষ্ণ স্থপতি স্টিফেন ওয়েটজমান।
বীরত্ব অবিনশ্বর
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের স্মরণে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর পাবনার বালিয়াহালট কবরস্থানের অদূরে খোলা প্রান্তরে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্মারক 'বীরত্ব অবিনশ্বর'। এর মূল পরিকল্পনাকারী পাবনার বর্তমান পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির। এটির নকশা করেন তার ভাগ্নে আহছান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আর্কিটেকচার জায়েদী আমান অয়ন। ২৫ মার্চ ২০১৭ 'বীরত্ব অবিনশ্বর'- এর উদ্বোধন করা হয়।
বীর: (সর্বোচ্চ উচ্চতার ভাস্কর্য)
বনানী ওভারপাস-এয়ারপোর্ট মোড় সৌন্দর্য বর্ধনের আওতায় বনানী-বিমানবন্দর সড়কের নিকুঞ্জের ১ নম্বর গেট বরাবর নির্মাণ করা হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার ভাস্কর্য "বীর"। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের নিজস্ব অর্থায়নে ও পরিকল্পনায় এটি স্থাপিত হয়। 'বীর' ভাস্কর্যের উচ্চতা ৫৩ ফুট। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট ও প্রন্থ ৬২ ফুট। প্রথাগতভাবে এ ভাস্কর্যের কোনো স্থপতি নেই। এর মূল ডিজাইনার হাজ্জাজ কায়সার। "বীর" ভাস্কর্য নির্মাণের আগে রাঙামাটি ক্যান্টনমেন্টে নির্মিত ৫০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্যটিকে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সর্বোচ্চ ভাস্কর্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
নামকরণ: 'বীর' বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো শ্লোগানের 'বীর' শব্দটি থেকে নামকরণ করা হয় 'বীর' ভাস্কর্যের।
বিষয়বস্তু: পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দিকে আর সামনের দিকে অস্ত্র হাতে এগিয়ে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা নারী। রাইফেল তাক করে ধরেছেন আরও দুই তরুণ। পেছনে উড়ছে যুদ্ধকালীন বাংলাদেশের পতাকা।
দৃপ্ত শপথ
১ জুলাই ২০১৬ গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগ স্মরণ করতে নির্মিত ভাস্কর্য। এটি নির্মাণ করা হয় গুলশানের পুরনো মডেল থানার সামনে মূল সড়কের পাশে। ১ জুলাই ২০১৮ এর উদ্বোধন করা হয়। এর ভাস্কর মৃণাল হক।
ঐতিহ্য নারায়ণগঞ্জ ভাস্কর্য
২৩ জুন ২০১৬ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে 'ঐতিহ্য নারায়ণগঞ্জ' শীর্ষক একটি ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্যের প্রধান শিল্পী মোবারক হোসেন খান। ভাস্কর্যের মাধ্যমে জেলার শতবর্ষের সভ্যতা, রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিক ইতিহাস সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে ভাস্কর্যটিতে তুলে ধরা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পানাম নগরীকে। ভাস্কর্যটি বেদিসহ ৬৫-৬৫ ফুট জায়গার ওপর নির্মিত।
সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ এর ভাস্কর্যসমূহ:
- অপরাজেয় বাংলা
- অঙ্কুর এবং ডলফিন
- মা ও শিশু এবং অস্বীকার
- আবহমান বাংলা (বিটিভি কেন্দ্রের সামনে)
⮚ স্মৃতিস্তম্ভ বীর গৌরব : রাজশাহী সেনানিবাস