বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (PSC)
- গঠন : সংবিধানের ১৩৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গঠিত একটি সাংবিধানিক, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান ।
- আঞ্চলিক কেন্দ্র : ছয়টি
- অধীনে বিসিএস ক্যাডারের সংখ্যা : ২৬টি
- বর্তমান চেয়ারম্যান : মো. সোহরাব হোসেন ( ১৩ তম )
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডার কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুল জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস গঠন করা হয়। শুরু দিকে ক্যাডার সংখ্যা ছিল ১৪টি। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে ক্যাডার সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ২৮টি। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ক্যাডার সংখ্যা করা হয় ২৯টি। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক করা হলে বিচার ক্যাডার বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়। এর ফলে ক্যাডার সংখ্যা কমে হয় ২৮টি। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বিধিমালায় টেলিকমিউনিকেশন ক্যাডার বিলুপ্ত করা হয়। যার ফলে ক্যাডার সংখ্যা কমে হয় ২৭টি। গত ১৩ নভেম্বর ২০১৮ সর্বশেষ বিসিএস ইকনমিক ক্যাডার বিলুপ্ত করে তা প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একীভূত করা হয়। তাই বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডার সংখ্যা ২৬টি।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন
- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি মেয়র নির্বাচন, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটি।
- বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন স্থাপিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রধানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বর্ণিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হল রাষ্ট্রপতি ও সংসদে নির্বাচন পরিচালনা, নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ, আইন কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য নির্বাচন পরিচালনা (এর মধ্যে সকল স্থানীয় সরকার পরিষদ যেমনঃ ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদ অর্ন্তভুক্ত) এবং আনুষঙ্গিক কার্যাদির সুষ্ঠু সম্পাদন। দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এ সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।
- বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার বর্তমানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীন ৪ জন নিয়ে ৫ সদস্যের একটি দল নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করছে। সাথে সাথে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন একজন সচিব। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৬৫ বছর।
- নির্বাচন কমিশন সচিবালয়: রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও-এ অবস্থিত। সচিবালয়ের প্রধান সরকারের একজন সচিব।
- RPO (Representation of the People Order)-এর IIIA পরিচ্ছেদের (নির্বাচনী ব্যয়) ৪৪খ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচনে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। ২০১৩ সালের RPO সংশোধনীর পূর্বে এর পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশের অন্যান্য কমিশন সমূহ
☞ দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-corruption Commission) সংক্ষেপে দুদক :
- ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ দুর্নীতি দমন কমিশন আইন পাস হয়।
- ২১ নভেম্বর, ২০০৪ দুর্নীতি দমন ব্যুরো বিলুপ্ত করে স্বাধীন 'দুর্নীতি দমন কমিশন' গঠিত হয়।
- দুর্নীতি দমন কমিশন ৩ সদস্য বিশিষ্ট (১ জন চেয়ারম্যান এবং ২ জন সদস্য)।
☞ তথ্য কমিশন (Information Commission) :
- ২৯ মার্চ, ২০০৯ জাতীয় সংসদে তথ্য কমিশন আইন, ২০০৯ পাস হয়।
- বাংলাদেশে প্রথম তথ্য কমিশন গঠিত হয় ১ জুলাই, ২০০৯।
- তথ্য কমিশনে সদস্য সংখ্যা ৩। (১ জন প্রধান তথ্য কমিশনার এবং দুইজন কমিশনার)
- প্রধান তথ্য কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
☞ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (University Grant Commission) :
- প্রতিষ্ঠাকাল : ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩
- সদস্য : ৩ জন (একজন চেয়ারম্যান ও দুইজন সদস্য)
- কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেন : শিক্ষামন্ত্রী
- উদ্দেশ্য : বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার চাহিদা নিরূপন ও উচ্চশিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি।
☞ রেগুলেটরি রিফরমস কমিশন (Regulatory Reforms Commission) :
- রেগুলেটরি রিফরমস কমিশন গঠিত হয়- : ৩০ অক্টোবর, ২০০৭
- RRC- এর পূর্ণ অভিব্যক্তি- : Regulatory Reforms Commission
- রেগুলেটরি রিফরমস কমিশনের কাজ : দেশের অপ্রয়োজনীয়, পুরানো ও জটিল বিধিবিধান সংস্কার করে সেগুলোকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা
☞ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (National Human Rights Commission) :
- প্রতিষ্ঠাকাল : ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
- কার্যক্রম : ১ ডিসেম্বর, ২০০৯
- সদস্য : ৩ জন (১ জন চেয়ারম্যান এবং ২ জন সদস্য)
- সদর দপ্তর : হেয়ার রোড, ঢাকা
☞ সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশন (Truth Commission) :
- প্রতিষ্ঠাকাল : ৩০ জুলাই, ২০০৮
- সদস্য : ৩ জন (১ জন চেয়ারম্যান এবং ২ জন সদস্য)
- সদর দপ্তর : হেয়ার রোড, ঢাকা
- কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৮
☞ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (Bangladesh Atomic Energy Commission) :
- পূর্বনাম : বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন
- অবস্থান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা একাডেমির পার্শ্বে
- প্রতিষ্ঠাকাল : ২৭ ফেব্রুয়ারি , ১৯৭৩
- সদর দপ্তর : আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।
☞ ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (JRC) :
- JRC এর পূর্ণরূপ : Joint River Commission
- প্রতিষ্ঠাকাল : ২৪ নভেম্বর, ১৯৭২ সাল
- উদ্দেশ্য : দু দেশের নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধি
- ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদী সংখ্যা : ৫৪টি এবং বাংলাপিডিয়ার তথ্য মতে ৫৫টি
যৌথ নদী কমিশনের মতে বাংলাদেশের মোট অভিন্ন বা ঐ আন্তঃসীমান্ত নদী ৫৭টি। ভারতের সাথে ৫৪টি এবং মায়ানমারের সাথে ৩টি (নাফ, মাতামুহুরি ও সাঙ্গু)।
☞ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন (Judicial Service Commission) :
- প্রতিষ্ঠাকাল : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪
- সদস্য : ৭ জন
- কাজ : সহকারী জজ নিয়োগ করা
- বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান : বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম