সংবিধান বা শাসনতন্ত্র হল একটি রাষ্ট্রের মৌলিক আইন। রাষ্ট্র সংবিধানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, “সংবিধান হল রাষ্ট্রের সেই জীবনধারা যা রাষ্ট্র নিজেই বেছে নিয়েছে” । রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য দেশে দেশে রয়েছে সংবিধান। আমাদের বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধান প্রণয়ন করেছে। নিম্নে বাংলাদেশের সংবিধান সংক্রান্ত তথ্যউপাত্ত উপস্থাপন করা হল। উল্লেখ্য , বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংবিধান ভারতের এবং সবচেয়ে ছোট সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রের।
- সংবিধানের প্রকারভেদ
- বাংলাদেশের সংবিধান রচনার ইতিহাস
- সংবিধানের বিভাগ, বিষয় ও অনুচ্ছেদ
- প্রথম ভাগ ☞ প্রজাতন্ত্র
- দ্বিতীয় ভাগ ☞ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
- তৃতীয় ভাগ ☞ মৌলিক অধিকার
- চতুর্থ ভাগ ☞ নির্বাহী বিভাগ
- পঞ্চম ভাগ ☞ আইন সভা
- ষষ্ঠ ভাগ ☞ বিচার বিভাগ
- সপ্তম ভাগ ☞ নির্বাচন
- অষ্টম ভাগ ☞ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
- নবম ভাগ ☞ বাংলাদেশের কর্মবিভাগ
- দশম ভাগ ☞ সংবিধান সংশোধন
- একাদশ ভাগ ☞ বিবিধ
- বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ
সংবিধানের প্রকারভেদ
সংবিধানকে প্রথমে দুইভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ লিখিত সংবিধান ও অলিখিত সংবিধান ।
- লিখিত সংবিধান : লিখিত সংবিধান বলতে আমরা সেই সংবিধানকে বুঝি যার ধারা বা নিয়মাবলী কোন দলিলে লিপিবদ্ধ করা থাকে। যেমন- বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশের সংবিধান।
- অলিখিত সংবিধান : অলিখিত সংবিধান বলতে আমরা সেই সংবিধানকে বুঝি যার ধারা বা নিয়মাবলী কোন দলিলে লিপিবদ্ধ করা থাকে না। যেমন- যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, স্পেন প্রভৃতি দেশের সংবিধান ।
সংশোধন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে সংবিধানকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- সুপরিবর্তনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান।
- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান (Flexible Constitution) : সুপরিবর্তনীয় সংবিধান এমন এক সংবিধান যা পরিবর্তন করার জন্য কোন পৃথক বা জটিল পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না। আইনসভার সাধারণ আইনের মত তা পরিবর্তন ও সংশোধন করা যায়।
- দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান (Rigid Constitution): দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান এমন এক সংবিধান যা পরিবর্তন করার জন্য জটিল ও বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। যেমন- বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশের সংবিধান। বাংলাদেশের সংবিধানের কোন অংশ পরিবর্তন করতে হলে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশের সংবিধান রচনার ইতিহাস
বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ অস্থায়ী সাংবিধানিক আদেশ জারি করেন। এই আদেশ বলে বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায় অনুসারে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় এবং শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ তারিখে বাংলাদেশের গণরিপরিষদ আদেশ জারি করেন। এ আদেশ ২৬ মার্চ , ১৯৭১ থেকে কার্যকরী বলে ঘোষিত হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত ৪৬৯-এর (জাতীয় পরিষদে ১৬৯ জন আর প্রাদেশিক পরিষদে ৩০০ জন) মধ্য থেকে ৪০৩ জন সদস্য নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়। এই গণপরিষদ ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত অস্থায়ী সংসদ হিসাবে কার্যকর ছিল। গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে ১৭ এপ্রিল, ১৯৭২। অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ। প্রথম অধিবেশনের শুরুতে শাহ আব্দুল হামিদ স্পীকার ও মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হন।
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি সংবিধান কমিটি গঠিত হয়। কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য বেগম রাজিয়া বানু / ইউ.এ.বি. রাজিয়া আক্তার বানু এবং একমাত্র বিরোধীদলীয় সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ছিলেন এ কমিটির প্রধান। ১৯৭২ সালের ১৭ এপ্রিল কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। বিভিন্ন মহল থেকে পাঠানো ৯৮টি প্রস্তাব সংবিধান কমিটি যথাযথ মূল্যায়নের পর ১০ জুন বিলের আকারে সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করে । খসড়াকে ত্রুটিমুক্ত ও নিখুঁত করার জন্য ভারত ও ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্রিটিশ নাগরিকের সাহায্য ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।
বাংলাদেশে সংবিধানের খসড়া সর্ব প্রথম গণপরিষদে উত্থাপিত হয় ১২ অক্টোবর, ১৯৭২। সংবিধানের খসড়া গণপরিষদে উত্থাপন করেন ড. কামাল হোসেন। ৪ নভেম্বর, ১৯৭২ বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়া গণপরিষদে গৃহীত হয়। এজন্য ৪ নভেম্বর ' সংবিধান দিবস ' হিসাবে পালিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর বা প্রবর্তিত হয় ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২।
বাংলাদেশের প্রথম হস্তলিখিত সংবিধান ছিল ৯৩ পাতার। হস্তলিখিত সংবিধানটির মূল লেখক ছিলেন শিল্পী আব্দুর রউফ । হস্তলিখিত সংবিধানটির অঙ্গসজ্জা করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন। গণপরিষদের সদস্যরা হস্তলিখিত মূল সংবিধানের বাংলা ও ইংরেজি লিপিতে স্বাক্ষর করেন ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭২। গণপরিষদের ৩০৯ জন সদস্য হস্তলিখিত মূল সংবিধানে স্বাক্ষর করেন। সংবিধান রচনা কমিটির বিরোধী দলীয় সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত হস্তলিখিত মূল সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি। সংবিধানের প্রচ্ছদ অলংকরণ করেন হাশেম খান ও কামরুল হাসান।
বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সংবিধানে ১টি প্রস্তাবনা, ৭টি তফসিল ও ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। সমগ্র সংবিধান ১১টি ভাগে বিভক্ত। সংবিধান প্রস্তাবনা দিয়ে শুরু হয় এবং ৭টি তফসিল দিয়ে শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাংবিধানিক নামের ইংরেজি পাঠ হলো 'The People's Republic of Bangladesh.
সংবিধানের বিভাগ, বিষয় ও অনুচ্ছেদ
সংবিধান হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। বাংলাদেশের সংবিধানে ১টি প্রস্তাবনা, ৭টি তফসিল, ১১টি ভাগ এবং ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে।
অধ্যায় / ভাগ | বিষয় | অনুচ্ছেদ |
---|---|---|
প্রথম | প্রজাতন্ত্র | ০১-০৭ |
দ্বিতীয় | রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি | ০৮-২৫ |
তৃতীয় | মৌলিক অধিকার | ২৬-৪৭ |
চতুর্থ | নির্বাহী বিভাগ | ৪৮-৬৪ |
১ম পরিচ্ছেদ-রাষ্ট্রপতি | ৪৮-৫৪ | |
২য় পরিচ্ছেদ- প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা | ৫৫-৫৮ | |
৩য় পরিচ্ছেদ- স্থানীয় শাসন | ৫৯-৬০ | |
৪র্থ পরিচ্ছেদ-প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ | ৬১-৬৩ | |
৫ম পরিচ্ছেদ-অ্যাটর্নি জেনারেল | ৬৪ | |
পঞ্চম | আইনসভা | ৬৫-৯৩ |
১ম পরিচ্ছেদ-সংসদ | ৬৫-৭৯ | |
২য় পরিচ্ছেদ-আইন প্রণয়ন ও অর্থ সংক্রান্ত পদ্ধতি | ৮০-৯২ | |
৩য় পরিচ্ছেদ-অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা | ৯৩ | |
ষষ্ঠ | বিচার বিভাগ | ৯৪-১১৭ |
১ম পরিচ্ছেদ-সুপ্রীম কোর্ট | ৯৪-১১৩ | |
২য় পরিচ্ছেদ-অধঃস্তন আদালত | ৮০ - ৯২ | |
৩য় পরিচ্ছেদ-প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল | ১১৭ | |
সপ্তম | নির্বাচন | ১১৮-১২৬ |
অষ্টম | মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক | ১২৭-১৩২ |
নবম | বাংলাদেশের কর্মবিভাগ | ১৩৩-১৪১ |
১ম পরিচ্ছেদ-কর্মবিভাগ | ১৩৩-১৪১ | |
২য় পরিচ্ছেদ-সরকারি কর্মকমিশন | ১৩৭-১৪১ | |
(ক) জরুরী বিধানাবলী | ১৪১ক-১৪১গ | |
দশম | সংবিধান সংশোধন | ১৪২ |
একাদশ | বিবিধ | ১৪৩-১৫৩ |
[ বিস্মিল্লাহির-রহ্মানির রহিম ]
প্রস্তাবনা
আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া [জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;
[আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে ;]
আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;
আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;
এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।
তফসিলঃ ৭টি
- প্রথম তফসিল : অন্যান্য বিধান সত্ত্বেও কার্যকর আইন
- দ্বিতীয় তফসিল : রাষ্ট্রপতি-নির্বাচন [বিলুপ্ত]
- তৃতীয় তফসিল : শপথ ও ঘোষণা
- চতুর্থ তফসিল : ক্রান্তিকাল ও অস্থায়ী বিধানমালা
- পঞ্চম তফসিল : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তারিখে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ।
- ষষ্ঠ তফসিল : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাত শেষে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা।
- সপ্তম তফসিল : ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
সংবিধানের চেতনার বিপরীত সামরিক শাসনকে বৈধতা দিতে ৪র্থ তফসিলের অপব্যবহার করা হয়।
প্রথম ভাগ ☞ প্রজাতন্ত্র
- ১ ≔ প্রজাতন্ত্র
বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র যা 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ' নামে পরিচিত হইবে। - ২ ≔ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা
- ২ক ≔ রাষ্ট্রধর্ম
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন। - ৩ ≔ রাষ্ট্রভাষা
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা - ৪ ≔ জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক
১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা'র প্রথম দশ চরণ।
২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।
৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্য শীর্ষ বেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর সংযুক্তপত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা। - ৪ক ≔ জাতির পিতার প্রতিকৃতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারি ও আধাসরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে। - ৫ ≔ রাজধানী
প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা - ৬ ≔ নাগরিকত্ব
২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন। - ৭ ≔ সংবিধানের প্রাধান্য
১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, ... । - ৭ক ≔ সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ
- ৭খ ≔ সংবিধানের মৌলিক বিষয়াবলী সংশোধনের অযোগ্য
দ্বিতীয় ভাগ ☞ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
- ৮ ≔ মূলনীতিসমূহ
১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এইনীতি সমূহ হইতে উদ্ভূত এইভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।
২) এইভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়োগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে, তবে এই সকল নীতি সকল আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য হইবে না। - ৯ ≔ জাতীয়তাবাদ
ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। - ১০ ≔ সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি
মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে। - ১১ ≔ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
- ১২ ≔ ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য
ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা
খ) রাষ্ট্র কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান
গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার
ঘ) কোন বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাঁহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে। - ১৩ ≔ মালিকানার নীতি
- ১৪ ≔ কৃষক ও শ্রমিক মুক্তি
- ১৫ ≔ মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা
- ১৬ ≔ গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
- ১৭ ≔ অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
- ১৮ ≔ জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা
- ১৮ক ≔ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিধান করিবেন। - ১৯ ≔ সুযোগের সমতা
৩) জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন। - ২০ ≔ অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম
- ২১ ≔ নাগরিক ও সরকারি কর্মচারীদের কর্তব্য
২) সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য । - ২২ ≔ নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ
রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করবেন । - ২৩ ≔ জাতীয় সংস্কৃতি
- ২৩ক ≔ উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি
রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। - ২৪ ≔ জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন প্রভৃতি
- ২৫ ≔ আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন
বর্তমানে সংবিধানের মূলনীতি (১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতি) | ৫ম সংশোধনীর দ্বারা প্রবর্তিত মূলনীতি |
---|---|
ধর্ম নিরপেক্ষতা | সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস |
জাতীয়তাবাদ | জাতীয়তাবাদ |
গণতন্ত্র | গণতন্ত্র |
সমাজতন্ত্র | সমাজতন্ত্র (অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায় বিচার অর্থে) |
মালিকানা তিন ধরনের যথাঃ
- রাষ্ট্রীয় মালিকানা
- ব্যক্তিগত মালিকানা
- সমবায়ী মালিকানা
জীবন ধারণের মৌলিক উপকরণ ৫টি। যথা-
- অন্ন (Food)
- বস্ত্র (Clothing)
- আশ্রয় (Shelter)
- শিক্ষা (Education)
- চিকিৎসা (Medical care)
তৃতীয় ভাগ ☞ মৌলিক অধিকার
- ২৬ ≔ মৌলিক অধিকারের অসামঞ্জস্য আইন বাতিল
- ২৭ ≔ আইনের দৃষ্টিতে সমতা
সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী । - ২৮ ≔ ধর্মীয় প্রভৃতি কারণে বৈষম্য
১) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
৩)....
৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবেন না।
- ২৯ ≔ সরকারি নিয়োগ লাভের সুযোগের সমতা
১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে।
২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁর প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাবে না।
- ৩০ ≔ বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ
রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোন নাগরিক কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট হইতে কোন খেতাব, সম্মান পুরস্কার বা ভূষণ গ্রহণ করিবেন না।
- ৩১ ≔ আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার
- ৩২ ≔ জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার
- ৩৩ ≔ গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষকবচ
- ৩৪ ≔ জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ
- ৩৫ ≔ বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ
- ৩৬ ≔ চলাফেরার স্বাধীনতা
- ৩৭ ≔ সমাবেশের স্বাধীনতা
- ৩৮ ≔ সংগঠনের স্বাধীনতা
- ৩৯ ≔ চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতা
১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা
২) ক- বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা
খ- সংবাদপত্রের স্বাধীনতা - ৪০ ≔ পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা
- ৪১ ≔ ধর্মীয় স্বাধীনতা
- ৪২ ≔ সম্পত্তির অধিকার
১) প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করার অধিকার থাকবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাবে না। - ৪৩ ≔ গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ
- 88 ≔ মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ
- ৪৫ ≔ শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন
- ৪৬ ≔ দায়মুক্তি বিধানের ক্ষমতা
- ৪৭ ≔ কতিপয় আইনের হেফাজত
৩) গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতা বিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সোপর্দ কিংবা দত্তদান বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না।
চতুর্থ ভাগ ☞ নির্বাহী বিভাগ
নির্বাহী বিভাগের পাঁচটি পরিচ্ছেদ রয়েছে যথাঃ ১ম-পরিচ্ছেদ রাষ্ট্রপতি , ২য় পরিচ্ছেদ - প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা , ৩য় পরিচ্ছেদ- স্থানীয় শাসন , ৪র্থ পরিচ্ছেদ- প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ , ৫ম পরিচ্ছেদ- অ্যাটির্নি জেনারেল ।
১ম পরিচ্ছেদ ☞ রাষ্ট্রপতি
- ৪৮ ≔ রাষ্ট্রপতি
১) রাষ্ট্রে একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।
২) রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য সকল ব্যক্তির উর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন।
৩) এই সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।
৪) কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না যদি তিনি-
ক) পয়ত্রিশ বৎসরের কম বয়স্ক হন। অথবা,
খ) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য না হন। অথবা,
গ) কখনও এই সংবিধানের অধীন অভিসংশন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ হইতে অপসারিত হইয়া থাকেন। - ৪৯ ≔ ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার
কোন আদালত, ট্রাইবুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন দন্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোন দন্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে। - ৫০ ≔ রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ
১) রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরের মেয়াদে তাঁর পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।
২) একাদিক্রমে হউক বা না হউক দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে কোন ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকবেন না।
৩) স্পীকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন। - ৫১ ≔ রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি
রাষ্ট্রপতি তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া কিংবা অনুরূপ বিবেচনায় কোন কার্য করিয়া থাকিলে বা না করিয়া থাকিলে সেইজন্য তাঁহাকে কোন আদালতে জবাবদিহি করিতে হইবে না , .........। - ৫২ ≔ রাষ্ট্রপতির অভিশংসন
১) এই সংবিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচারণের অভিযোগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাইতে পারিবে।
৪) অভিযোগ বিবেচনার পর মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে অভিযোগ যথার্থ বলিয়া ঘোষণা করিয়া সংসদ কোন প্রস্তাব গ্রহণ করিলে প্রস্তাব গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে। - ৫৩ ≔ অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ
- ৫৪ ≔ অনুপস্থিতি প্রভৃতির কালে রাষ্ট্রপতি পদে স্পীকার
রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ক্ষেত্রমত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কিংবা রাষ্ট্রপতি পুনরায় স্বীয় কার্যাভাবে গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্পীকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করিবেন।
২য় পরিচ্ছেদ ☞ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা
- ৫৫ ≔ মন্ত্রিসভা
২) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তাহার কর্তৃত্বে এই সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হইবে।
৩) মন্ত্রীসভা যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকবে।
৪) সরকারের সকল নির্বাহী ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে। - ৫৬ ≔ মন্ত্রীগণ
১) একজন প্রধানমন্ত্রী থাকিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকিবেন।
২) প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদিগকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দান করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তাঁহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ সদস্যগণের মধ্য থেকে নিযুক্ত হবেন এবং এক দশমাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনোনীত হইতে পারিবেন। - ৫৭ ≔ প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ
- ৫৮ ≔ মন্ত্রীদের পদের মেয়াদ
৩য় পরিচ্ছেদ ☞ স্থানীয় শাসন
- ৫৯ ≔ স্থানীয় শাসন
- ৬০ ≔ স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত্র প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা
৪র্থ পরিচ্ছেদ ☞ প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ
- ৬১ ≔ সর্বাধিনায়কতা
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত হইবে। - ৬২ ≔ প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি
- ৬৩ ≔ যুদ্ধ
সংসদের অনুমতি ব্যতীত যুদ্ধ ঘোষণা করা যাইবে না কিংবা প্রজাতন্ত্র কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিবেন না।
৫ম পরিচ্ছেদ ☞ অ্যাটর্নি জেনারেল
- ৬৪ ≔ অ্যাটর্নি জেনারেল
১) সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি হইবার যোগ্য কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের এ্যাটার্নি জেনারেল পদে নিয়োগ নিয়োগ দান করবেন।
৪) রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীয় পদে বহাল থাকবেন এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত পারিশ্রমিক লাভ করবেন।
Technocrat মন্ত্রী: সংসদ সদস্য নন কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এমন মন্ত্রীদের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী বলে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৬(২) ধারায় বলা হয়েছে। যে, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদগকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দান করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তাহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ-সদস্যগণের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন এবং অনধিক এক-দশমাংশ সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হতে মনোনীত হইতে পারবেন। অর্থাৎ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১০% টেকনোক্রেট মন্ত্রী নিয়োগ দেয়া যায়।
অ্যাটর্নি জেনারেল: বাংলাদেশ সরকারের প্রধান আইনজীবীকে অ্যাটর্নি জেনারেল বলে।
রাষ্ট্রপতি ব্যতীত অন্য সব পদে যেমন- মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী , উপমন্ত্রী , স্পীকার , সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ প্রাপ্তির নূন্যতম বয়স ২৫ বৎসর । শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ প্রাপ্তির নূন্যতম বয়স ৩৫ বৎসর ।
রাষ্ট্রপতির কার্যাবলী
- সরকারের যাবতীয় নির্বাহি কর্মাদি রাষ্ট্রপতির নামে সম্পাদিত হয়।
- প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীর নিয়োগ।
- অ্যাটর্নি জেনারেল, প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারবৃন্দ, পিএসসি চেয়ারম্যানের নিয়োগ দান।
- বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের সর্বাধিনায়ক।
- রাষ্ট্রপতি সম্মতি ব্যতীত কোন বিল আইনে পরিণত হয় না। রাষ্ট্রপতির নিকট কোন বিল উত্থাপনের পর ১৫ দিনের মধ্যে পাস করতে হয়। রাষ্ট্রপতি যদি কোন বিল পুনরায় সংসদের পুনর্বিবেচনার জন্য প্রেরণ করে তা ফেরত আনার সাত দিনের মধ্যে পাস করতে হবে।
- সংসদ কার্যরত অবস্থায় না থাকলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করতে পারে।
- রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রধান।
- রাষ্ট্রপতির মেয়াদ: পাঁচ বছর। এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের অধিককাল রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারবেন না।
- রাষ্ট্রপতির কার্যালয় - বঙ্গভবনে।
- রাষ্ট্রপতি নির্বাচন - ১৯৯১ সালের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পরোক্ষ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা হয়।
- বর্তমান রাষ্ট্রপতি - মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি
পঞ্চম ভাগ ☞ আইন সভা
১ম পরিচ্ছেদ ☞ সংসদ
- ৬৫ ≔ সংসদ প্রতিষ্ঠা
১) 'জাতীয় সংসদ' (House of the nation) নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ থাকিবে এবং এই সংবিধানের বিধানবলী সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে।
২) একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফায় কার্যকরতাবলে উক্তদফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত হইবে। সদস্যগণ 'সংসদ সদস্য' বলে অভিহিত হবেন। ৩ (ক) সংবিধান (পঞ্চদশ) আইন, ২০১১ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত তিনশত সদস্য এবং (৩) দফায় বর্ণিত পঞ্চাশ মহিলা সদস্য লইয়া সংসদ গঠিত হইবে। - ৬৬ ≔ সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা অযোগ্যতা
১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাঁহার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন।
২) কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না যদি-
ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাহাকে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন।
খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ করিয়া না থাকেন।
গ) তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেন।
ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন ২ বৎসরকাল কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে। - ৬৭ ≔ সংসদের আসন শূন্য হওয়া
কোন সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে যদি-
ক) তাঁহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৯০ দিনের মধ্য তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথগ্রহণ এবং শপথপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন।
খ) সংসদের অনুমতি না লইয়া একাদিক্রমে ৯০ বৈঠক দিবস অনুপস্থিত থাকেন।
গ) সংসদ ভাঙ্গিয়া যায়। - ৬৮ ≔ সংসদ সদস্যের পারিশ্রমিক প্রভৃতি
- ৬৯ ≔ শপথগ্রহণের পূর্বে আসনগ্রহণ বা ভোটদান করলে সদস্যের অর্থদণ্ড
- ৭০ ≔ পদত্যাগ ইত্যাদি কারণে আসন শূন্য হওয়া
কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি উক্তদল হইতে পদত্যাগ করেন বা সংসদে উক্তদলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাঁহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে। - ৭১ ≔ দ্বৈত সদস্যতায় বাধা
- ৭২ ≔ সংসদের অধিবেশন
১) সরকারি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহবান, স্থগিত ও ভঙ্গ করিবেন.....। তবে শর্ত থাকে যে, ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার (ক) উপদফায় উল্লিখিত নব্বই দিন সময় ব্যতীত অন্য সময়ে সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি এবং পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্য ৬০ দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকবে না।
২) সংসদ সদস্যদের যে কোন সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হইবার ৩০ দিনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহবান করা হইবে।
৩) রাষ্ট্রপতি পূর্বে ভাঙ্গিয়া দিয়া না থাকিলে প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৫ বৎসর অতিবাহিত হইলে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাবে। - ৭৩ ≔ সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষন ও বাণী
২) সংসদ সদস্যদের প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনের পর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় এবং প্রত্যেক বছর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দান করিবেন। - ৭৩ক ≔ সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রিগণের অধিকার
- ৭৪ ≔ স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার
- ৭৫ ≔ কার্যপ্রণালী বিধি, কোরাম প্রভৃতি
১) এই সংবিধান সাপেক্ষে-
ক)...
খ) উপস্থিত ও ভোট দানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সংসদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে। তবে সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে তিনি (স্পীকার) নির্ণায়ক ভোট (Casting vote) প্রদান করিবেন।
৩) সংসদের বৈঠক চলাকালে কোন সময় উপস্থিত সদস্য সংখ্যা ষাটের কম বলিয়া যদি সভাপতির দৃষ্ট আকর্ষণ করা হয়, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত বৈঠক স্থগিত রাখিবেন কিংবা মূলতবী করিবেন।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের কোরাম হয় কমপক্ষে ৬০ জন সদস্য উপস্থিত থাকলে। ৬০ জনের কম উপস্থিত থাকলে স্পিকার বৈঠক স্থগিত করে ৫ মিনিট সময় ধরে সংসদের ঘণ্টা বাজান এতেও কোরাম না হলে স্পিকার বৈঠক মূলতবি ঘোষণা করেন। কোনো বৈঠকে কোরাম থাকাকে বলে Quarate এবং কোরাম না থাকাকে বলে Inquarate - ৭৬ ≔ সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ
সংসদ সদস্যদের মধ্য হইতে সদস্য লইয়া সংসদ নিম্নলিখিত স্থায়ী কমিটি নিয়োগ করিবেন-
ক) সরকারি হিসাব কমিটি
খ) বিশেষ অধিকার কমিটি
গ) সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিতে নির্দিষ্ট অন্যান্য স্থায়ী কমিটি। - ৭৭ ≔ ন্যায়পাল
১) সংসদ আইন দ্বারা ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারিবেন।
২) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালকে কোন মন্ত্রণালয়, সরকারি কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের যে কোন কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ যেরূপ ক্ষমতা কিংবা যেরূপ দায়িত্ব প্রদান করিবেন, ন্যায়পাল সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব পালন করিবেন।
ন্যায়পাল:
• ন্যায়পালের ইংরেজি প্রতিশব্দ "Ombudsman" যার অর্থ প্রতিনিধি বা মুখপাত্র।
• এ পদটি সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয় ১৮০৯ সালে, সুইডেনে।
• গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে ৭৭নং অনুচ্ছেদে ন্যায়পাল সম্পর্কে বলা হয়েছে ।
• ১৯৭২ সাল থেকে সংবিধানে ন্যায়পালের বিধান রয়েছে।
• ১৯৮০ সালে ন্যায়পাল নিয়োগ ও তার দায়িত্ব নির্ধারন করে Ombudsman Act প্রণয়ন করা হয়।
• বাংলাদেশ সৃষ্টির সময়ই সংবিধানে ন্যায়পালের কথা বলা থাকলেও তা আজও বাস্তবের মুখ দেখেনি। - ৭৮ ≔ সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি
- ৭৯ ≔ সংসদ সচিবালয়
২য় পরিচ্ছেদ ☞ আইন প্রণয়ন ও অর্থ সংক্রান্ত পদ্ধতি
- ৮০ ≔ আইন প্রণয়ন পদ্ধতি
৩) রাষ্ট্রপতির নিকট কোন বিল পেশ করিবার পর ১৫ দিনের মধ্য তিনি তাহাতে সম্মতি দান করিবেন কিংবা অর্থবিল ব্যতীত অন্য কোন বিলের ক্ষেত্রে বিলটি বা তাহার কোন বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনার কিংবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্দেশিত কোন সংশোধনী বিবেচনার অনুরোধ জ্ঞাপন করিয়া একটি বার্তাসহ তিনি বিলটি সংসদে ফেরত দিতে পারবেন ; এবং রাষ্ট্রপতি তাহা করিতে অসামর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হবে। - ৮১ ≔ অর্থবিল
এই ভাগে 'অর্থবিল' বলিতে কেবল নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের সকল বা যে কোন একটি সম্পর্কিত বিধানাবলী-সংবলিত বিল বুঝাইবে।
ক) কোন কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণ। খ) সরকার কর্তৃক ঋণগ্রহণ বা গ্যারন্টি দান কিংবা সরকারের আর্থিক দায় দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশোধন।
গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরূপ তহবিলে অর্থ প্রদান বা অনুরূপ তহবিল হইতে অর্থ দান বা নির্দিষ্টকরণ।
ঘ) সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় আরোপ কিংবা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলোপ।
৬) সংযুক্ত তহবিল বা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলোপ।
চ) উপরি-উক্ত উপদফাসমূহে নির্ধারিত যে কোন বিষয়ের অধীন অনুষাঙ্গিক বিষয়। - ৮২ ≔ আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ
কোন অর্থ বিল অথবা সরকারি অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত আছে এমন কোন বিল রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতীত সংসদে উপস্থাপন করা যাবে না। - ৮৩ ≔ সংসদের আইন ব্যতীত করারোপে বাধা
- ৮৪ ≔ সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব
১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল ঋণ এবং ঋণ পরিশোধ হইতে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিণত হইবে এবং তাহা 'সংযুক্ত তহবিল' নামে অভিহিত হবে। - ৮৫ ≔ সরকারি অর্থের নিয়ন্ত্রণ
- ৮৬ ≔ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে প্রদেয় অর্থ
- ৮৭ ≔ বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি
- ৮৮ ≔ সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়
- ৮৯ ≔ বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি
- ৯০ ≔ নির্দিষ্টকরণ আইন
- ৯১ ≔ সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরি
- ৯২ ≔ হিসাব ঋণ প্রভৃতির উপর ভোট
- ৯২ক ≔ বিলুপ্ত
৩য় পরিচ্ছেদ ☞ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা
- ৯৩ ☞ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা
১) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অথবা উহার অধিবেশনকাল ব্যতীত কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেরূপ প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে করিবেন, সেইরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারিবেন এবং জারী হইবার সময় হইতে অনুরূপভাবে প্রণীত অধ্যাদেশ সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে....।
২) কোন অধ্যাদেশ জারী হইবার পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে তাহা উপস্থাপিত হইবে এবং ইতঃপূর্বে বাতিল হইয়া না থাকিলে অধ্যাদেশটি অনুরূপভাবে উপস্থাপনের পর ৩০ দিন অতিবাহিত হইলে কিংবা অনুরূপ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে তাহা অনুমোদন করিয়া সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হইলে অধ্যাদেশটির কার্যকারিতা লোপ পাইবে।
তথ্য কণিকা
- সরকারি বিল: সংসদে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সদস্যদের উত্থাপিত বিলকে 'সরকারি বিল' বলে।
- বেসরকারি বিলঃ সংসদে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছাড়া অন্য সংসদ সদস্য কর্তৃক উত্থাপিত বিলকে 'বেসরকারি বিল' বলে।
- জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটিঃ বর্তমানে জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটি ৪৮টি। এর মধ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ৩৭ টি এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ১১টি। জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটিকে বলা হয় 'মিনি পার্লামেন্ট'।
- ২৫ মার্চ ২০১০ যুদ্ধাপরাধের বিচারের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ গঠন করা হয়। ২২ মার্চ ২০১২ ট্রাইবুনাল-২ গঠন করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গঠিত দুটি ট্রাইবুনাল ১০ আগস্ট ২০১৬ পর্যন্ত মোট ২৬টি রায় প্রদান করে।
- বাংলাদেশের যে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন না প্রথম ও ষষ্ঠ সংসদ।
- জাতীয় সংসদের কার্যবিবরণী রেকর্ড বাংলা ভাষায় সংরক্ষণ করা হয়। তবে স্পিকার প্রয়োজনে কার্যবিবরণীর কোন অংশ বা উদ্ধৃতি ইংরেজি ভাষা সংরক্ষণের অনুমতি দিতে পারেন।
- সংসদে উত্থাপিত তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দেয়া হয় -- মৌখিক ভাবে।
- সংসদে এক অধিবেশন হতে আরেক অধিবেশনে বিরতি সর্বোচ্চ -- ৬০ দিন।
- সাধারণ নির্বাচনের কতদিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন আহ্বান করতে হয়--৩০ দিনের মধ্যে।
- বাংলাদেশ যে জেলায় সংসদীয় আসন সবচেয়ে কম -- রাঙামাটি , বান্দরবান , খাগড়াছড়ি একটি করে।
- জাতীয় সংসদের নির্বাচিত কোন সদস্য একটানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।
কিছু শব্দের বাংলা পরিভাষা
- Floor Crossing : নিজ দলের বিপক্ষে অবস্থান বা অন্য দলে যোগদান।
- Protocol : পদমর্যাদা দেওয়া
- Impeachment : অভিশংসন (রাষ্ট্রপতির অপসারণ প্রক্রিয়া)
- Ordinance : অধ্যাদেশ (রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত জরুরি আইন)
- White paper : শ্বেতপত্র (দেশের গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নিয়মকানুন সম্বলিত দলিলপত্র)
- Custing vote : স্পিকারের ভোট
- By Election : উপনির্বাচন (৯০ দিনের মধ্যে হয়)
- Quorum : অকার্যকর সংসদ (৬০ দিনের মধ্যে হয়)
ষষ্ঠ ভাগ ☞ বিচার বিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ ☞ সুপ্রীম কোর্ট
- ৯৪ ≔ সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা
১) 'বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।
২) ধারায় বলা হয়েছে, "প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসনগ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রপতি যেইরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রীম কোর্ট গঠিত হইবে।" বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি রয়েছেন ১১ জন । - ৯৫ ≔ বিচারক নিয়োগ
১) প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।
২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং
ক) সুপ্রীম কোর্টে অন্যূন ১০ বৎসরকাল এ্যাডভোকেট না করিয়া থাকলে
খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্য অন্যূন ১০ বছরকাল কোন বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে, অথবা,
গ) সুপ্রীম কোর্টে বিচারক পদে নিয়োগ লাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য যোগ্যতা না থাকিলে তিনি বিচারক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না। - ৯৬ ≔ বিচারকদের পদের মেয়াদ
১) কোন বিচারক ৬৭ বৎসর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
২) এই অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ বিধানবলী অনুযায়ী ব্যতীত কোন বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে না।
৩) একটি সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থাকিবে যাহা এই অনুচ্ছেদে "কাউন্সিল" বলিয়া উল্লেখিত হইবে এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া গঠিত হইবে। - ৯৭ ≔ অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ
- ৯৮ ≔ সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ
- ৯৯ ≔ বিচারকগণের অক্ষমতা
- ১০০ ≔ সুপ্রীম কোর্টের আসন
- ১০১ ≔ হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার
- ১০২ ≔ কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা
- ১০৩ ≔ আপীল বিভাগের এখতিয়ার
- ১০৪ ≔ আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও নির্বাহ
- ১০৫ ≔ আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা
- ১০৬ ≔ সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার
- ১০৭ ≔ সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন ক্ষমতা
- ১০৮ ≔ 'কোর্ট অব রেকর্ড' রূপে সুপ্রীম কোর্ট
- ১০৯ ≔ আদালত সমূহের উপর তত্ত্বাবধায়ন ও নিয়ন্ত্রণ
- ১১০ ≔ অধস্তন বিভাগ হইতে হাইকোর্ট বিভাগের মামলা স্থানান্তর
- ১১১ ≔ সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা
- ১১২ ≔ সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা
- ১১৩ ≔ সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ
২য় পরিচ্ছেদ ☞ অধঃস্তন আদালত
- ১১৪ ≔ অধঃস্তন আদালতসমূহ প্রতিষ্ঠা
- ১১৫ ≔ অধঃস্তন আদালতে নিয়োগ
- ১১৬ ≔ অধঃস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা
- ১১৬ক ≔ বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন
৩য় পরিচ্ছেদ ☞ প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল
- ১১৭ ≔ প্রশাসনিক ট্রাইবুনালসমূহ
- বাংলাদেশের সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যাকারক হল - সুপ্রীম কোর্ট।
- কোড অব রেকর্ড বলা হয় - সুপ্রিম কোর্টকে।
- বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত - সুপ্রিম কোর্ট।
- বিচারপতি পদের মেয়াদ - ৬৭ বছর
- কিশোর অপরাধী : ৭-১৬ বছর।
সাংবিধানিক পদ সমুহ:
- রাষ্ট্রপতি
- প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী
- স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার
- সংসদ সদস্যগণ
- প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতি
- নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার
- অ্যাটর্নি জেনারেল
- সরকারি কর্ম কমিশন চেয়ারম্যান
- মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
সপ্তম ভাগ ☞ নির্বাচন
- ১১৮ ≔ নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা
৩) কোন নির্বাচন কমিশনারের পদের মেয়াদ তাঁহার কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর কাল হইবে। - ১১৯ ≔ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব
- ১২০ ≔ নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ
- ১২১ ≔ প্রতিটি এলাকার জন্য একটি মাত্র ভোটার তালিকা
- ১২২ ≔ ভোটার তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা
২) কোন ব্যক্তি সংসদের নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত কোন নির্বাচনী এলাকায় ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি-
ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন।
খ) তাঁহার বয়স ১৮ বৎসরের কম না হয়।
গ) কোন যোগ্য আদালত কর্তৃক তাঁহার সম্পর্কে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘোষণা বহাল না থাকিয়া থাকে।
ঘ) তিনি ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বা আইনের দ্বারা ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বিবেচিত হন।
ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত ইইয়া না থাকেন । - ১২৩ ≔ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়
১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখে পূর্ববর্তী ৯০ দিন হইতে ৬০ দিনের মধ্য শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
২) মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণের ফলে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার পর ৯০ দিনের মধ্য, তাহা পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
৩) সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে-
ক) মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে
খ) মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদ ভাঙিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে
গ) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদের কোন সদস্যপদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার ৯০ দিনের মধ্য উক্ত শূন্যপদ পুরণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে। - ১২৪ ≔ নির্বাচন সম্পর্কে সংসদে বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
- ১২৫ ≔ নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা
- ১২৬ ≔ নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তা দান
অষ্টম ভাগ ☞ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
- ১২৭ ≔ মহা হিসাব নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা
১) বাংলাদেশে একজন মহানিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (অতঃপর 'মহাহিসাব নিরীক্ষক' নামে অভিহিত) থাকিবেন এবং তাঁহাকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগদান করিবেন। - ১২৮ ≔ মহা হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব
- ১২৯ ≔ মহা হিসাব নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ
১) মহাহিসাব নিরীক্ষক তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাঁহার ৬৫ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্য যাহা অগ্রে ঘটে, সেইকাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। - ১৩০ ≔ অস্থায়ী মহা হিসাব নিরীক্ষক
- ১৩১ ≔ প্রজাতন্ত্রের হিসাব রক্ষার আকার ও পদ্ধতি
- ১৩২ ≔ সংসদে মহা নিরীক্ষকের হিসাব উপস্থাপন
নবম ভাগ ☞ বাংলাদেশের কর্মবিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ ☞ কর্মবিভাগ
- ১৩৩ ≔ নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী
- ১৩৪ ≔ কর্মের মেয়াদ
- ১৩৫ ≔ অসামরিক সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি
- ১৩৬ ≔ কর্মবিভাগ পুনর্গঠন
২য় পরিচ্ছেদ ☞ সরকারি কর্মকমিশন
- ১৩৭ ≔ কমিশন প্রতিষ্ঠা
আইনের দ্বারা বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিক সরকারি কর্মকমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান করা যাইবে এবং একজন সভাপতিকে ও আইনের দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ অন্যান্য সদস্যকে লইয়া প্রত্যেক কমিশন গঠিত হইবে। - ১৩৮ ≔ সদস্য নিয়োগ
১) প্রত্যেক সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক কমিশনের যতদূর সম্ভব অর্ধেক (তবে অর্ধেকের কম নহে) সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হইবেন, যাঁহারা ২০ বৎসর বা ততোধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন সময়ে কার্যরত কোন সরকারের কর্মে কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। - ১৩৯ ≔ পদের মেয়াদ
১) কোন সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাঁহার ৬৫ বৎসর পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। - ১৪০ ≔ কমিশনের দায়িত্ব
- ১৪১ ≔ বার্ষিক রিপোর্ট
১) প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্পর্কে রিপোর্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।
বাংলাদেশের সরকারি কর্ম কমিশন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (BCS) ক্যাডার সংখ্যা ২৬। ১৩ নম্বেভর, ২০১৮ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ও ইকনমিক ক্যাডার একীভূত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। ফলে ইকনমিক ক্যাডার বিলুপ্তি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ক্যাডার সংখ্যা ২৬ টি।
নবম-ক ভাগ ☞ জরুরী বিধানাবলী
- ১৪১ক ≔ জরুরী অবস্থা ঘোষণা
- ১৪১খ ≔ জরুরী অবস্থার সময় সংসদের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ
- ১৪১গ ≔ জরুরী অবস্থার সময় মৌলিক অধিকার সমূহ স্থগিতকরণ
জরুরী অবস্থার সময় সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০ এবং ৪২ নং অনুচ্ছেদ স্থগিত করা হয়।
দশম ভাগ ☞ সংবিধান সংশোধন
- ১৪২ ≔ সংবিধানে বিধান [সংশোধনের] ক্ষমতা
১) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও
ক) সংসদের আইন দ্বারা এই সংবিধানের কোন বিধান সংশোধিত হইতে পারিবে: তবে শর্ত থাকে যে,
অ) অনুরূপ সংশোধনীর জন্য আনীত কোন বিলের সম্পূর্ণই শিরনামায় এই সংবিধানের কোন বিধান সংশোধন করা হইবে বলিয়া স্পষ্টরূপে উল্লেখ না থাকিলে বিলটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করা হইবেনা;
আ) সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত না হইলে অনূরূপ কোন বিলে সম্মতিদানের জন্য তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইবে না।
খ) উপরি-উক্ত উপায়ে কোন বিল গৃহীত হইবার পর সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট তাহা উপস্থাপিত হইলে উপস্থাপনের সাত দিনের মধ্য তিনি বিলটিতে সম্মতি দান করিবেন এবং তাহা করিতে অসামর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতি দান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
২) এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কোন সংশোধনের ক্ষেত্রে ২৬ অনুচ্ছেদের কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।
একাদশ ভাগ ☞ বিবিধ
- ১৪৩ ≔ প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি
- ১৪৪ ≔ সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব
- ১৪৫ ≔ চুক্তি ও দলিল
- ১৪৫ক ≔ আন্তর্জাতিক চুক্তি
- ১৪৬ ≔ বাংলাদেশের নামে মামলা
'বাংলাদেশ' এই নামে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইতে পারিবে। - ১৪৭ ≔ কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি
- ১৪৮ ≔ পদের শপথ
- ১৪৯ ≔ প্রচলিত আইনের হেফাজত
- ১৫০ ≔ ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী
- ১৫১ ≔ রহিতকরণ
- ১৫২ ≔ ব্যাখ্যা
- ১৫৩ ≔ প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ
১) এই সংবিধানকে 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান' বলিয়া উল্লেখ করা হইবে এবং ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে ইহা বলবৎ হইবে, যাহাকে এই সংবিধানে 'সংবিধান প্রবর্তন' বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে।
২) বাংলায় এই সংবিধানের একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ ও ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুমোদিত পাঠ থাকবে এবং ..... ।
৩) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্য বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাবে।
বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ
বাংলাদেশের সংবিধানকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলা হলে ও কার্যত এটি দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কিনা তা এখন বিচার্য বিষয় । স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সংবিধানে এখন পর্যন্ত ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে। অথচ ১৭৮৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ২৩৭ বছরে মার্কিন সংবিধান এখন পর্যন্ত মাত্র ২৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। কোনটাকে আমরা দুষ্পরিবর্তনীয় বলব বাংলাদেশ নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । যদি ও বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করতে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের পর্যন্ত প্রয়োজন হয় । তারপর ও যে যার মতো কাটাছেঁড়া এই সংবিধান । সংসদীয় ব্যবস্থা পাল্টে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা যেমন প্রবর্তন করা হয়েছিল, অন্যদিকে দু'বার সামরিক শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছিল সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে। এছাড়া ও জনগণের মেীলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করার ঘটনা ও ঘটেছে সংবিধান সংশোধনীর ইতিহাসে । নিচে প্রথম থেকে সপ্তদশ সংশোধনীর তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হল ।
সংশোধনীর নাম | সংশোধিত তথ্য |
---|---|
প্রথম সংশোধনী | ⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (প্রথম সংশোধন) আইন, ১৯৭৩ ⮚ উত্থাপন ≔ ১২ জুলাই, ১৯৭৩ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১৫ জুলাই, ১৯৭৩ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনী আনীত ও গৃহীত হওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল '৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আটককৃত পাকিস্তানী যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের জন্য সরকারকে উপযুক্ত ক্ষমতা প্রদান করা। এ সংশোধনীর মাধ্যমে যুদ্ধ অপরাধীদের আইনের আশ্রয়, প্রকাশ্য বিচার এবং সুপ্রীম কোর্টে মামলা দায়ের করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। |
দ্বিতীয় সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৩ ⮚ উত্থাপন ≔ ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ আভ্যন্তরীণ ও বহিরাক্রমণ গোলযোগে দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন বিপন্ন হলে সে অবস্থায় জরুরী অবস্থা ঘোষণার বিধান । এছাড়া এ সংশোধনীতে নির্বাহী বিভাগকে নিবর্তনমূলক আটক আইনের ক্ষমতানুসারে যে কোন ব্যক্তিকে ৬ মাস বিনা বিচারে আটক রাখার সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করা হয়েছে। |
তৃতীয় সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান [তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ২৩ নভেম্বর, ১৯৭৪ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা এবং ভারতকে বেরুবাড়ী হস্তান্তর এবং ২৫ বছর মেয়াদি ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তির সাংবিধানিক বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। |
চতুর্থ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (চতুর্থ সংশোধন) আইন, ১৯৭৫ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ২৫ জানুয়ারি, ১৯৭৫ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এটি ছিল এদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এক দিনে একটি বিল পাস হওয়ার ঘটনা। এ সংশোধনীর মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে এবং সংবিধানের গণতান্ত্রিক চরিত্রের আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতির অন্যতম গণতন্ত্র তিরোহিত হয় এবং এর মাধ্যমে সংবিধানের যথেচ্ছ ব্যবহার শুরু হয়। নিম্নে চতুর্থ সংশোধনীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল:
|
পঞ্চম সংশোধনী [বর্তমানে বাতিল ] |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (পঞ্চম সংশোধন) আইন, ১৯৭৯ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ সংসদ নেতা শাহ আজিজুর রহমান ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৫ এপ্রিল, ১৯৭৯ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
|
ষষ্ঠ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (ষষ্ঠ সংশোধন) আইন, ১৯৮১ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ সংসদ নেতা শাহ আজিজুর রহমান ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৮ এপ্রিল, ১৯৮১ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনী ছিল এক ব্যক্তি ও দলের স্বার্থ চরিতার্থের জনা। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দলটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচনের জন্যই এ সংশোধনী আনা হয়। ইতোপূর্বে সংবিধানে উল্লেখ ছিল যে, উপরাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর মতো লাভজনক পদে থেকে কেউ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির পদকে অলাভজনক ঘোষণা করা হয় এবং বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত করা হয়। |
সপ্তম সংশোধনী [বর্তমানে বাতিল ] |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১০ নভেম্বর, ১৯৮৬ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এটি ছিল পঞ্চম সংশোধনীর ধারাবাহিকতা মাত্র। পাঁচ ঘন্টার ব্যবধানে উত্থাপিত ও গৃহীত এই বিলটি একই দিনে রাষ্ট্রপভির অনুমোদন লাভ করে। এ সংশোধনীর মাধ্যমে জেনারেল এরশাদ তার সামরিক শাসন আমলে গৃহীত সকল অবৈধ ফরমানসমূহের বৈধতা দান করে। এছাড়া ৯৬ অনুচ্ছেদের ১নং দফায় 'বাষট্টি' শব্দের পরিবর্তে 'পয়ষট্টি' শব্দটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে। |
অষ্টম সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (অষ্টম সংশোধন) আইন, ১৯৮৮ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ সংসদ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৭ জুন, ১৯৮৮ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয় এবং এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের মনবাসনার ঘোলকলা পূর্ণ করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান হতে চূড়ান্তভাবে ধর্মনিরপেক্ষতাকে উঠিয়ে দেয়া হয়। নিম্নে এ সংশোধনীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল:
|
নবম সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান ( নবম সংশোধন) আইন, ১৯৮৯ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ সংসদ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১০ জুলাই, ১৯৮৯ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে মার্কিনী কায়দায় রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হওয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এক ব্যক্তির দুই মেয়াদের অধিক প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং বিভিন্ন প্রেসিডেন্সিয়াল নিয়ম কানুন জারি করা হয়। অবশ্য দ্বাদশ সংশোধনীর পর এ সংশোধনীর আর কার্যকারিতা নেই। |
দশম সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (দশম সংশোধন) আইন, ১৯৯০ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইন ও বিচারমন্ত্রী হাবিবুল ইসলাম ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১২ জুন, ১৯৯০ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত ৩০টি মহিলা আসনকে আরো ১০ বছরের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। এ ব্যবস্থা ছিল প্রয়োজনীয়, কারণ মহিলা আসনের মেয়াদ শেষ হবার পথে । এছাড়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি এতে উপস্থাপন করা হয়। |
একাদশ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (একাদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯১ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইন ও বিচারমন্ত্রী মীর্জা গোলাম হাফিজ ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৬ আগস্ট, ১৯৯১ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে তিন জোটের অঙ্গীকার অনুযায়ী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমদের পূর্বপদে ফিরে যাওয়ার বাবস্থা করা হয়। তবে সমালোচকরা এটাও বলতে ছাড়েনি যে, এটি ষষ্ঠ সংশোধনীর ন্যায় এক ব্যক্তির জন্য সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির সকল কর্মকান্ডের বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। |
দ্বাদশ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (দ্বাদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯১ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৬ আগস্ট, ১৯৯১ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মূল লক্ষ্য ছিল তিন জোটের ঘোষণা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির পরিবর্তে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন । এ সংশোধনী মোতাবেক প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তাঁর কর্তৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হয় এবং সরকারের সকল নির্বাহী ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হয়েছে বলে যোষণার ব্যবস্থা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এ সংশোধনী ছিল জনগণের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ । এ সংশোধনীতে উপ-রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী পদগুলো বিলুপ্ত করা হয় । দ্বাদশ সংশোধনীকে চতুর্থ সংশোধনীর বিপরীত সংশোধনী বলা হয় । |
ত্রয়োদশ সংশোধনী [বর্তমানে বাতিল] |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ২৭ মার্চ, ১৯৯৬ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর মাধ্যমে ভবিষ্যতে সকল জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য "নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা" প্রবর্তন করা হয়। এই সরকার সংসদ ভেঙ্গে দেবার পর দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তার মেয়াদ শেষ হবে । |
চতুর্দশ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১৬ মে, ২০০৪ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ সরকারিভাবে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি সরকারি অফিসসহ নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন। সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বয়স ৬৫ থেকে ৬৭ বছর, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বয়স নিয়োগ লাভের তারিখ হতে ৫ বছর বা ৬৫বছর বয়স পর্যন্ত এবং সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতি এবং অন্যান্য সদস্যদের বয়স ৬২ থেকে ৬৫ তে উন্নীতকরণ। নির্বাচনের পর নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ করাতে স্পীকার ব্যর্থ হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শপথবাক্য পাঠ করাবেন |
পঞ্চদশ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৩০ জুন, ২০১১ ⮚ বিষয়বস্তু ≔ এ সংশোধনীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
|
ষোড়শ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) আইন, ২০১৪ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪। [ ৩২৮-০ ভোটে নবম জাতীয় সংসদে পাস হয়। ] ⮚ বিষয়বস্তু ≔ ১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম। - এই আইন সংবিধান (ষোড়শ সংশোধনী) আইন, ২০১৪ নামে অভিহিত হইবে। ২। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ এর প্রতিস্থাপন |
সপ্তদশ সংশোধনী |
⮚ শিরোনাম ≔ সংবিধান [সপ্তদশ সংশোধনী] আইন, ২০১৮ ⮚ উত্থাপন ≔ ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ⮚ উত্থাপনকারী ≔ আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ⮚ সংসদে পাশের তারিখ ≔ ৮ জুলাই, ২০১৮ (২৯৮-০ ভোটে)। ⮚ বিষয়বস্তু ≔ সংরক্ষিত ৫০ জন নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ানো। |
অবৈধ সংশোধনী
পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ: ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে বি.এন.পি লিভ টু আপিল করে। আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তা খারিজ করে দেয়। ২০১০ সালের ২৮ জুলাই আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।
সপ্তম সংশোধনী অবৈধ : ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে। ২০১১ সালের ১৫ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই রায় বহাল রাখে।
ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ: ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল: ২০১৭ সালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় প্রদান করেন।
শপথ গ্রহণ
রাষ্ট্রপতি যাদের শপথ পড়ান-
- প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ
- প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাগণ
- স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার
- প্রধান বিচারপতি
স্পীকার সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ান-
- রাষ্ট্রপতি
- সংসদ সদস্যদের
প্রধান বিচারপতি যাদের শপথ পড়ান-
- প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার
- মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
- সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য
- সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি
বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার। তবে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বে প্রধান বিচারপতি পাঠ করাতেন। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান মহামান্য রাষ্ট্রপতি।