আমরা এটা জনি যে চাঁদ যেমন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তেমন পৃথিবীও সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এভাবে একটা সময় চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে একই সরলরেখায় আসে এবং ঐ সরলরেখায বরাবর কিছু সময়ের জন্য চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে যদি পৃথিবী অবস্থান করে ,তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদে পড়ে। এ সময় পৃথিবীর ছায়ার জন্য বা পৃথিবী ভেদ করে চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, ফলে চাঁদকে তখন কিছু সময়ের জন্য দেখা যায় না। এ ঘটনার কারণে যদি পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে চাঁদকে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য দেখা না যায় তখন একে সংক্ষেপে চন্দ্রগ্রহণ বলে। তবে অন্য কোন কারণে যেমন- আবহাওয়াজনিত কারণে চাঁদকে দেখা না গেলে সেটা চন্দ্রগ্রহণ বলে বিবেচিত হবে না । পূর্ণিমার তিথিতে এ ঘটনা ঘটে। এই সময় পৃথিবী, সূর্যকে আংশিক ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে আংশিক দেখা যায় না একে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ বলে। আর পৃথিবী সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে পুরোপুরি দেখা যায় না একে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বলে। চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ যদি পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে, ফলে চাঁদ স্বাভাবিকের চাইতে বড় ও উজ্জল দেখা যায়। এ কারণে একে সুপারমুন বলা হয়। চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ এবং সূর্য পৃথিবীর দুই পাশে যদি ঠিক এক লাইনে অবস্থান করে তখন তাকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বলে। চন্দ্রগ্রহণের সময় যদিও পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে ঢেকে ফেলে তারপর ও কিছুটা সূর্যরশ্মি চাঁদের ওপর গিয়ে পড়ে। চাঁদে পৌঁছানোর জন্য ওই সূর্যরশ্মিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এই যাবার পথে সূর্যের নীল রশ্মির বেশিরভাগ বায়ুমণ্ডলে শোষিত হয়ে যায়। ফলে এই প্রক্রিয়ার সময় চাঁদকে লাল দেখায় এবং এই রক্তিম চাঁদকে অনেকসময় নাম দেয়া হয় "ব্লাড মুন"। চাঁদের তুলনায় পৃথিবীর ব্যাস অনেক বেশি হওয়ায়, পৃথিবীর ঐ ব্যাসের পথ অতিক্রম করতে চাঁদের অনেকটা সময় লাগে। এই জন্য সূর্যগ্রহনের স্থায়ীত্ত্ব কয়েক মিনিট হলেও চন্দ্রগ্রহণের স্থায়ীত্ত্ব ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
