বিজন ভট্টাচার্য (১৯০৬-১৯৭৮)
বাঙালি নাট্যমঞ্চের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ও সুঅভিনেতা বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন ‘নবনাট্য আন্দোলন' এর প্রধান পুরোহিত। তিনি মার্কসীয় দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা ও বাঁচবার কথা তাঁর নাটকগুলির মূল বিষয় ছিল। পরবর্তীতে তিনি নাটকে লোকায়ত ধর্ম, দর্শন ও হিন্দু ধর্মের সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন।সমাজের নিচুতলার মানুষের জীবনচিত্রই তাঁর নাটকের মূল উপজীব্য।
বিজন ভট্টাচার্যের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | বিজন ভট্টাচার্য ১৯০৬ সালে ফরিদপুরের খানখানাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
সহধর্মিণী | কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী তাঁর সহধর্মিণী। |
গ্রেফতার | তিনি অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২০-২২) অংশগ্রহণ করায় রাজবাড়ীতে গ্রেফতার হন । |
থার্ড থিয়েটার | তিনি নবনাট্য আন্দোলনের প্রথম পুরোহিত ছিলেন। এ আন্দোলনকে ‘থার্ড থিয়েটার' বলা হয়।তিনি ‘গণনাট্যসংঘ' এর অন্যতম অভিনেতা ছিলেন। |
নাটক | তাঁর রচিত নাটকসমূহ: ‘ আগুন' (১৯৪৩): এটি তাঁর রচিত প্রথম নাটক । ‘ নবান্ন' (১৯৪৪): এটি ১৯৪৩ সালে ধারাবাহিকভাবে সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার সম্পাদিত ‘অরণি' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সমকালীন জাতীয় আন্দোলন, মেহনতি মানুষের চাহিদা ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ কৃষক সমাজের দুঃখ-দুর্দশা, তাদের সংগ্রাম, সফলতা-ব্যর্থতা ইত্যাদি অবলম্বনে রচিত এ নাটক নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র প্রধান সমাদ্দার একজন চাষী। পঞ্চাশের মন্বন্তরে তার পরিবারের দুঃখ দুর্দশাই এ নাটকের বিষয়বস্তু। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার কিছু কিছু জায়গায় তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। এ সুযোগে সুবিধাবাদী ও চোরাকারবারিরা ইচ্ছেমতো নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। এ যেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় আর মনুষ্য সৃষ্ট সংকটের জাঁতাকলে পিষ্ট মানবতা। যেসব মানুষ রাস্তায় দুর্ভিক্ষের মৃত মানুষ দেখে মুখ ফিরেয়ে গেছে ‘নবান্ন' নাটক দেখে সেসব মানুষেরই চোখে জল ঝরেছে। ‘জনপদ ' (১৯৪৫), ‘ কলঙ্ক ' (১৯৪৬), ‘ মরাচাঁদ ’ (১৯৪৬), ‘ অবরোধ ' (১৯৪৭), ‘ গোত্রান্তর' (১৯৬০) [‘গোত্রান্তর' ছোটগল্পের লেখক সুবোধ ঘোষ] । |
মৃত্যু | তিনি ১৯ জানুয়ারি, ১৯৭৮ সালে কলকাতায় মারা যান । |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন