রশীদ করীম (১৯২৫-২০১১)
প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক রশীদ করীম নাগরিক জীবন-ইতিহাস-নগর সমাজের সমন্বয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের এবং বাংলাদেশের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক জীবনের বহুমুখী পরিচয় বিধৃত করেছেন। সমাজ মনস্কতা, মধ্যবিত্তের মনস্তত্ত্ব ও টানাপোড়েন তাঁর উপন্যাসের উপজীব্য ।
রশীদ করীমের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | রশীদ করীম ১৪ আগস্ট, ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ঢাকায় চলে আসেন । কথাসাহিত্যিক আবু রুশদ তাঁর ভাই । |
প্রথম গল্প | তাঁর রচিত প্রথম গল্প ‘ আয়েশা ’ ১৯৪২ সালে ‘ সওগাত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। |
পুরস্কার ও সম্মাননা | তিনি আদমজী পুরস্কার (১৯৬১), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭২), একুশে পদক (১৯৮৪), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯১) পান । |
উপন্যাস | তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ: ‘উত্তম পুরুষ' (১৯৬১): এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, যা দেশবিভাগের প্রেক্ষাপটে রচিত। প্রধান চরিত্র শাকেরকে ঘিরে সেলিনা, অনিমা, শেখর, মুশতাক ইত্যাদি চরিত্র আবর্তিত এবং এদের মনস্তাত্ত্বিক জটিলতায় কোথাও কোথাও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। নগরজীবনের বৈশিষ্ট্য অবলম্বনে উপন্যাসটি রচিত। পুরো উপন্যাসে শাকের তিনটি নারী চরিত্রের নৈকট্য লাভ করে। কিন্তু তাদের পাওয়ার পথে আসে বিভিন্ন ধরনের বাঁধা। এ উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৬১ সালে ‘আদমজী পুরস্কার' পান। ‘প্রসন্ন পাষাণ' (১৯৬৩): প্রধান চরিত্র তিশনা এ উপন্যাসের কথক। উত্তম পুরুষের বর্ণনায় উপন্যাসটি রূপায়িত। চরিত্রঃ তিশনা, কামিল, আলিম । ‘আমার যত গ্লানি' (১৯৭৩): স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিক অস্থিরতাকে আশ্রয় করে তিনি এটি রচনা করেন। এতে ১৯৪৭ সাল থেকে ২৬ মার্চ, ১৯৭১ সালের মধ্যকার কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ঢাকার একটি বহুজাতিক ফার্মের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির এরফান চৌধুরী। অফিসের পর ক্লাবে বসে মদপান ও নারীসঙ্গ বিশেষত মধ্যবয়সী সুন্দরী আয়েশার সাথে সময় কাটানো তার কাজ। তবে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে আত্মকেন্দ্রিক এরফান এ সময়টাকে অস্বীকার করতে পারেনি। ব্যক্তিজীবনে নায়ক এরফান অন্তর্গতভাবে দহন হবার ফলে সামাজিক কঠিন বাস্তবতার কাছে বারংবার পরাজিত হয়। কিন্তু অন্তরাত্মাকে সজাগ রাখে বলে শেষ অবধি সে অপরাজিত থাকে। এ অপরাজেয় মানসিকতাই এ উপন্যাসের মূলসুর । ‘প্রেম একটি লাল গোলাপ' (১৯৭৮): উমর চরিত্রের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত জীবনের হীনমন্যতা, নিজ চরিত্রে নিহিত যৌবন বিকারের কাহিনি ফুটে উঠেছে। ‘সাধারণ লোকের কাহিনি' (১৯৮২), ‘ শ্যামা ' (১৯৮৪), ‘সোনার পাথর বাটি’ , ‘ খাঁচায় ’, ‘মায়ের কাছে যাচ্ছি', ‘পদতলে রক্ত’, ‘বড়ই নিঃসঙ্গ’, ‘লাঞ্চবাক্স' (১৯৯৩)। |
প্রবন্ধগ্রন্থ | তাঁর রচিত প্রবন্ধগ্রন্থ সমূহ : ‘আর এক দৃষ্টিকোন’, ‘অতীত হয় নূতন পুনরায়’, ‘মনের গহনে তোমার মুরতিখানি’। |
গল্পগ্রন্থ | গল্পগ্রন্থ: ‘প্রথম প্রেম' । |
আত্মজীবনী | আত্মজীবনী: ‘জীবন মরণ' (১৯৯৯)। |
মৃত্যু | তিনি ১৯৯২ সালে পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হন এবং ২৬ নভেম্বর, ২০১১ সালে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টারে মারা যান । |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন