আহমদ ছফা (১৯৪৩-২০০১)
বিশিষ্ট লেখক, চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিক আহমদ ছফার রচনায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতিসত্তার পরিচয়। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর প্রথাবিরোধী, নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য বুদ্ধিজীবী মহলে বিশেষ পরিচিত ছিলেন।
আহমদ ছফার সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | আহমদ ছফা ৩০ জুন, ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
বিশেষ অবদান |
তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাকে স্বাধীন করার প্রত্যয়ে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির' গঠন করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা ‘ প্রতিরোধ' প্রকাশ করেন । ১৯৮০ সালে কাঁটাবন বস্তিতে তিনি ‘শিল্পী সুলতান কর্ম ও শিক্ষাকেন্দ্র' চালু করেন। |
সম্পাদনা | তিনি ‘উত্থানপর্ব’ , ‘দাবানল' (এটি তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। |
সম্মাননা | তিনি একুশে পদক (মরণোত্তর) পান। |
উপন্যাস | তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ: ‘সূর্য তুমি সাথী' (১৯৬৭): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস । ‘ ওঙ্কার ' (১৯৭৫) : এটি ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে লেখা স্বাধীন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি উত্থানের এক মনোজ্ঞ রূপায়ণ। উপন্যাসের নায়ক আবু নসরের বোবা মেয়েকে বিয়ে করে। আবু নসরের সাথে আইয়ুব খানের সম্পর্ক থাকায় সে একধরনের ক্ষমতা লাভ করে। এ কাহিনিসূত্র ধরেই উপন্যাসের কাহিনি গতি লাভ করেছে। এখানে আইয়ুব খানের তথাকথিত সামরিক শাসনের সমালোচনা করা হয়েছে। ‘একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন' (১৯৮৮): আইয়ুব খান থেকে শুরু করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রচিত। ‘মরণ বিলাস' (১৯৯০): রাত ১২:১৩ মিনিট থেকে ভোর পর্যন্ত একান্ত সাগরেদ মাওলা বক্সের কাছে একজন মুমূর্ষু রাজনীতিবিদের সরল স্বীকারোক্তিতে ব্যক্ত হয় রাজনৈতিক জীবনের নানা উত্থান-পতন, সিঁড়ি বেয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কাহিনি। একই সাথে নেতার করুণ মিনতিও প্রকাশিত হয়েছে। ‘ অলাতচক্র' (১৯৯৩): উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতে অভিবাসী বাঙালিদের নিয়ে রচিত। প্রেমের কাহিনি হলেও এতে ধ্বনিত হয়েছে উদ্বাস্তু বাঙালিদের দৈন্যদশা। ‘গাভী বিত্তান্ত” (১৯৯৫) : এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মের প্রেক্ষাপটে রচিত ব্যাঙ্গাত্নক রচনা। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত ভিসি মিঞা মোহাম্মদ আবু জোনায়েদ (প্রতীকী চরিত্র) । ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী' (১৯৯৬): উপন্যাসটি ‘প্রাণপূর্ণিমার চান’ নামে সাপ্তাহিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী' । ‘বিহঙ্গ পুরাণ” (১৯৮৬), ‘পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ' (১৯৯৬)। |
প্রবন্ধ | তাঁর প্রবন্ধগুলো: ‘জাগ্রত বাংলাদেশ” (১৯৭১): এটি স্বাধীন বাংলাদেশের প্ৰথম গ্ৰন্থ ৷ ‘যদ্যপি আমার গুরু' (১৯৯৭): এটি জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক প্রসঙ্গে রচিত। ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস' (১৯৭২), ‘বাংলা ভাষা : রাজনীতির আলোকে’ (১৯৭৫), ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা' (১৯৭৭), 'বাঙালি মুসলমানের মন' (১৯৮১), ‘রাজনীতির লেখা’ (১৯৯৩), ‘সংকটের নানা চেহারা' (১৯৯৬), ‘বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র' (২০০১), ‘উপলক্ষের লেখা’ (২০০১), ‘সেইসব লেখা' (২০০৮) |
অন্যান্য রচনাবলি | তাঁর অন্যান্য রচনাবলি: গল্প : ‘নিহত নক্ষত্র' (১৯৬৯) কবিতা : ‘জল্লাদ সময়’ (১৯৭৪), ‘দুঃখের দিনে দোহা' (১৯৭৫), ‘একটি প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা' (১৯৭৭), ‘লেনিন ঘুমোবে এবার' (১৯৯৯)। অনুবাদ : ‘তানিয়া’ (১৯৬৭), ‘ফাউস্ট' (১৯৮৬)। শিশুতোষ : ‘দোলা আমার কনক চাপা' (১৯৬৮), 'গোঁ-হাকিম' (১৯৭৭)। ইতিহাস গ্রন্থ : ‘সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাস' (১৯৭৯) |
মৃত্যু | তিনি ২৮ জুলাই, ২০০১ সালে মারা যান । |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন