আবুল ফজল (১৯০৩-১৯৮৩)
সমাজ ও সমকাল সচেতন প্রাবন্ধিক আবুল ফজল কথাশিল্পী হিসেবে প্রসিদ্ধ। স্বদেশপ্রীতি, অসাম্প্রদায়িক জীবনচেতনা, সত্যনিষ্ঠা, মানবতা ও কল্যাণবোধ ইত্যাদি তাঁর সাহিত্যকর্মের প্রতিপাদ্য বিষয়। রবীন্দ্রনাথের গান পাকিস্তানের আদর্শের পরিপন্থী এই বক্তব্য উপস্থাপন করে পাকিস্তান সরকার ২২ জুন, ১৯৬৭ সালে রেডিও ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে সরকারের সে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন ।
আবুল ফজলের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | আবুল ফজল ১ জুলাই, ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
সাহিত্য সংগঠন ও সম্পাদনা | তিনি ‘ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ' (১৯২৬) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং ১৯৩০ সালে এর সম্পাদক নিযুক্ত হন। ‘ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ' এর মুখপত্র ‘ শিখা’। এটি ১৯২৭ সালে আবুল হোসেনের সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকার স্লোগান ছিল- ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব'। ১৯৩১ সালে তিনি ‘শিখা’র ৫ম সংখ্যা সম্পাদনা করেন। তিনি ছিলেন ‘বুদ্ধির মুক্তি' আন্দোলনের অন্যতম কর্ণধার । |
বিশেষত্ব | তিনি ‘মুক্তবুদ্ধির চিরসজাগ প্রহরী' নামে খ্যাত । তিনি ‘জাতির বিবেক’ বলে স্বীকৃতি লাভ করেন । |
পেশা | তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (১৯৭৩) এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা ছিলেন (১৯৭৫)। |
পুরস্কার ও সম্মাননা | তিনি উপন্যাসে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২) ও ‘ রেখাচিত্র' গ্রন্থের জন্য আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬) পান । ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট উপাধি লাভ করেন। |
সাহিত্যকর্ম |
আবুল ফজলের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম: উপন্যাস: ‘রাঙ্গা প্রভাত' (১৯৫৭): এটি প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ‘চৌচির’ (১৯৩৪), ‘প্রদীপ ও পতঙ্গ' (১৯৪০)। গল্পগ্রন্থ : ‘মাটির পৃথিবী’ (১৯৪০), ‘মৃতের আত্মহত্যা' (১৯৭৮)। নাটক : ‘কায়েদে আজম' (১৯৪৬), ‘প্রগতি' (১৯৪৮), ‘স্বয়ম্বরা (১৯৬৬)। দিনলিপি: ‘রেখাচিত্র' (১৯৬৬), ‘লেখকের রোজনামচা' (১৯৬৯), ‘দুর্দিনের দিনলিপি' (১৯৭২)। প্ৰবন্ধ: ‘বিচিত্র কথা” (১৯৪০), ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতি সাধনা' (১৯৬১), ‘সাহিত্য সংস্কৃতি ও জীবন (১৯৬৫), ‘সমাজ সাহিত্য ও রাষ্ট্র' (১৯৬৮), ‘সমকালীন চিন্তা' (১৯৭০), ‘মানবতন্ত্র’ (১৯৭২), ‘সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ' (১৯৭৪), ‘শুভবুদ্ধি’ (১৯৭৪), ‘একুশ মানে মাথা নত না করা' (১৯৭৮), ‘রবীন্দ্র প্রসঙ্গ' (১৯৭৯)। জীবনী ও স্মৃতিকথা: ‘সাংবাদিক মজিবর রহমান' (১৯৬৭), ‘শেখ মুজিব : তাঁকে যেমন দেখেছি' (১৯৭৮)। বিখ্যাত গল্প: চোর, বিবর্তন, প্রেম ও মৃত্যু, রহস্যময়ী প্রকৃতি । |
মৃত্যু | তিনি ৪ মে, ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামে মারা যান । |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন