ক্রিয়ার ভাব কাকে বলে?
ক্রিয়ার যে অবস্থা দ্বারা কার্য ঘটার ধরন, প্রকার বা রীতি প্রকাশ পায়, তাকে ক্রিয়ার ভাব বলে। ক্রিয়ার ভাব বা ধরন চার প্রকার। যথা:
১. নির্দেশক ভাব
সাধারণ ঘটনা নির্দেশ করলে বা কিছু জিজ্ঞাসা করলে ক্রিয়াপদের নির্দেশক ভাব হয়। যেমন-
ক. সাধারণ নির্দেশক : আমরা বই পড়ি ।
খ. প্রশ্ন জিজ্ঞাসায় : আপনি কি আসবেন?
২. ক্রিয়ার অনুজ্ঞা বা অনুজ্ঞা ভাব
আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, অনুরোধ, আশীর্বাদ ইত্যাদি সূচিত হলে ক্রিয়াপদের অনুজ্ঞা ভাব হয়। যেমন-
ক. আদেশাত্মক : বর্তমান কালে- চুপ কর । ভবিষ্যৎ কালে- তুমি কাল যেও ।
খ. নিষেধাত্মক : বর্তমান কালে- অন্যায় কাজ করো না। ভবিষ্যৎ কালে- মিথ্যা বলবে না।
গ. অনুরোধসূচক : বর্তমান কালে- ছাতাটা দিন তো ভাই । ভবিষ্যৎ কালে- আপনারা আসবেন।
ঘ. উপদেশাত্মক : বর্তমান কালে- মন দিয়ে পড়।ভবিষ্যৎ কালে- স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি রেখো।
■ উত্তম পুরুষের অনুজ্ঞা হয় না। কারণ, কেউ নিজেকে আদেশ করতে পারে না।
■ অপ্রত্যক্ষ বলে নাম পুরুষের অনুজ্ঞা হয় না।
সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষের সাধারণ ভবিষ্যতের ক্রিয়ার রূপটি সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষের ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায় ব্যবহৃত হয়।
অনুজ্ঞা দুই প্রকার। যথা: i. বর্তমান কালের অনুজ্ঞা, ii. ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞা।
i. বর্তমান কালের অনুজ্ঞা
ক. আদেশ : কাজটি করে ফেল। তোমরা এখন যাও।
খ. উপদেশ : সত্য কথা গোপন করো না। কড়া রোদে ঘোরাফেরা করিস না। পাতিসনে শিলাতলে পদ্মপাতা।
গ. অনুরোধ : আমার কাজটা এখন কর। অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও না।
ঘ. প্রার্থনা : আমার দরখাস্তটা পড়ুন।
ঙ. অভিশাপ : মর, পাপিষ্ঠ ।
ii. ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞা
ক. আদেশ : সদা সত্য বলবে।
খ. সম্ভাবনায় : চেষ্টা কর, সবই বুঝতে পারবে।
গ. বিধান অর্থে : রোগ হলে ওষুধ খাবে।
ঘ. অনুরোধে : কাল একবার এসো (আসিও বা আসিবে)।
৩. সাপেক্ষ ভাব
একটি ক্রিয়ার সংঘটন অন্য একটি ক্রিয়ার ওপর নির্ভর করলে, নির্ভরশীল ক্রিয়াকে সাপেক্ষ ভাবের ক্রিয়া বলা হয়। যেমন-
ক. সম্ভাবনায় : তিনি ফিরে এলে সবকিছুর মীমাংসা হবে।
খ. উদ্দেশ্য বোঝাতে : ভালো করে পড়লে সফল হবে।
গ. ইচ্ছা বা কামনায় : আজ বাবা বেঁচে থাকলে আমার এত কষ্ট হতো না।
৪. আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক ভাব
যে ক্রিয়াপদে বক্তা সোজাসুজি কোনো ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে, তাকে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক ভাবের ক্রিয়া বলা হয়। যেমন-সে যাক। যা হয় হোক। সে একটু হাসুক।
আপনার জন্য আরো: ক্রিয়ার কাল